বেসামরিক ও সামরিক নিরাপত্তা ক্ষেত্রে সহযোগিতা জোরদার করতে ঢাকা-ওয়াশিংটন সম্মত
রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে মঙ্গলবার বিকেলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের রাজনৈতিক সামরিক বিষয়ক ব্যুরোর ডেপুটি অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি মিরা রেজনিকের নেতৃত্বাধীন প্রতিনিধি দলের ডায়লগে এ কথা বলেন। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ ব্যাপারে একটি প্রেস বিজ্ঞপ্তি দেয়।
সংলাপে বাংলাদেশের ইন্দো-প্যাসিফিক দৃষ্টিভঙ্গি এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইন্দো-প্যাসিফিক কৌশল, আসন্ন জাতীয় নির্বাচন, নিরাপত্তা সহায়তা, প্রতিরক্ষা বাণিজ্য ও সহযোগিতা, সন্ত্রাসবাদ ও সহিংস চরমপন্থা মোকাবেলাসহ পারস্পরিক স্বার্থের বিভিন্ন নিরাপত্তা বিষয়ে আলোচনা হয়।
উভয় পক্ষ বেসামরিক ও সামরিক নিরাপত্তা ক্ষেত্রে সহযোগিতা জোরদার করতে সম্মত হয়েছে। তারা জলবায়ু পরিবর্তন, জ্বালানি নিরাপত্তা এবং আন্তর্জাতিক অপরাধসহ অপ্রচলিত নিরাপত্তা বিষয় নিয়েও আলোচনা করেন। বাংলাদেশ যেকোন ধরনের সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে জিরো-টলারেন্সের বিবৃত অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করেছে এবং সন্ত্রাসবাদ ও সহিংস চরমপন্থা মোকাবেলায় অব্যাহত সহযোগিতার ওপর জোর দেয়।
বৈঠকে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হিসেবে নিরাপত্তা সহযোগিতাকে উল্লেখ করা হয়েছে। বিভিন্ন ধরনের প্রশিক্ষণ, তথ্য আদান-প্রদান এবং যৌথ মহড়ার মাধ্যমে তাদের সক্ষমতা বৃদ্ধিতে মার্কিন পক্ষ বাংলাদেশের সশস্ত্র বাহিনী ও আইন প্রয়োগকারী সংস্থার প্রতি সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করা হয়। সামুদ্রিক নিরাপত্তা বিষয়ে একসঙ্গে কাজ করার জন্য বাংলাদেশের আহ্বানে যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ ইতিবাচক সাড়া দিয়েছে।
বাংলাদেশ পুনর্ব্যক্ত করেছে যে রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনই দীর্ঘস্থায়ী রোহিঙ্গা সংকটের চূড়ান্ত সমাধান এবং সমস্যা সমাধানে বৃহত্তর আন্তর্জাতিক সমর্থন চেয়েছে। মার্কিন পক্ষ ১০ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দেওয়ার জন্য বাংলাদেশের প্রশংসা করেছে এবং মানবিক সহায়তা সম্প্রসারণে বাংলাদেশের পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উত্তর আমেরিকা উইং মহাপরিচালক খন্দকার মাসুদুল আলম এবং মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের রাজনৈতিক-সামরিক বিষয়ক ব্যুরোর আঞ্চলিক নিরাপত্তা বিষয়ক উপ-সহকারী সেক্রেটারি মিরা রেসনিক নিজ নিজ প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন।
বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ সরকারি মন্ত্রণালয় ও সংস্থার প্রতিনিধিরা এবং মার্কিন সরকার ও মার্কিন দূতাবাসের প্রতিনিধিরা সংলাপে অংশ নেন।
পরে রেসনিক পররাষ্ট্র সচিব রাষ্ট্রদূত মাসুদ বিন মোমেনের সাথে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন।সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, সুষ্ঠু-অবাধ নির্বাচন অনুষ্ঠানে সরকার বদ্ধপরিকর।
পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেন সাংবাদিকদের জানান, এখানে সরাসরি জিসোমিয়া-আকসা চুক্তি নিয়ে আলোচনা হয়নি। প্রতিরক্ষা সংলাপে তা নিয়ে আলোচনা হয়েছিল। তবে আমরা বলেছি, বিভিন্ন দেশের সঙ্গে একই ধরনের চুক্তি নিয়ে কাজ আছে। আপনারা জানেন যে, কৌশলগত সংলাপে জাপানও আমাদের কনসিডার করছে, তাদের অফিসিয়াল সিকিউরিটি অ্যাসিস্ট্যান্সে আমাদের তারা ক্যান্ডিডেট কান্ট্রি হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করেছে। সুতরাং বিভিন্ন দেশের কাছ থেকে অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করছি। আগামীতে তাদের সঙ্গেও সেভাবেই আলোচনা হবে বলে আমরা আশা রাখি।আরেক প্রশ্নের উত্তরে সচিব বলেন, র্যাবের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার নিয়ে তারা আলোচনা করেছেন।