২৭ জুলাই ঢাকায় বিএনপির মহাসমাবেশ
সরকারের পদত্যাগের এক দফা দাবিতে আগামী ২৭ জুলাই ঢাকায় মহাসমাবেশের ঘোষণা দিয়েছে বিএনপি।
শনিবার (২২ জুলাই) রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ‘তারুণ্যের সমাবেশ’ থেকে এই কর্মসূচি ঘোষণা করেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মির্জা ফখরুল বলেন, অবিলম্বে সরকারের পদত্যাগ, নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন, বিরোধীদলের সকল নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা প্রত্যাহার, সকল রাজবন্দির মুক্তির এক দফা আন্দোলনে এই মহাসমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে।
তিনি বলেন, জিয়াউর রহমান স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়ে যুদ্ধ করেছেন, খালেদা জিয়া স্বৈরাচারের পতন ঘটিয়ে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা করেছেন, আর তারেক রহমান দেশের এই ক্রান্তিকালে হাল ধরেছেন ভোটাধিকার ফিরিয়ে এনে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করার জন্য। দেশে যখনই ক্রান্তিকাল এসেছে তখনই জিয়াউর রহমানের পরিবার হাল ধরেছে।
বিএনপির মহাসচিব বলেন, সরকার অলিখিত এক দলীয় সরকার কায়েম করেছে। মানুষের কথা বলার, ভোটাধিকার হরণ করে নিয়েছে।
মির্জা ফখরুল বলেন, সরকার ঘরে ঘরে চাকরি দেবে, ১০ টাকা কেজিতে চাল দেবে, বিনামূল্যে সার দেওয়ার কথা বলে ক্ষমতায় এসেছে। কিন্তু আজকে তা দেওয়া হচ্ছে না। আওয়ামী লীগ না করলে কেউ চাকরি পায় না।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ হলো সেই সন্ত্রাসী দল, যারা অন্য কাউকে সহ্য করতে পারে না। লাখ লাখ শহীদের বিনিময়ে অর্জিত এই দেশের মানুষের টাকা নিয়ে আজ বিদেশে বেগম পাড়া তৈরি করা হচ্ছে।
ডেঙ্গু রোগীদের চিকিৎসার কোনো ব্যবস্থা নাই হাসপাতালে, এমনকি মশা মারারও কোনো ব্যবস্থা নাই। কারণ মশা মারার ওষুধ দুর্নীতি করে লুটপাট করেছে, বলেন মির্জা ফখরুল।
‘এই সরকার ভীরু কাপুরুষ সরকার’ উল্লেখ করে তিনি বলেন, সেই কারণে তারা নির্বাচন দিতে ভয় পায়। তারা এমন নির্বাচন চায় যে নির্বাচনে বিএনপিসহ বিরোধী দল যাতে নির্বাচনে না যেতে পারে।
এখন ভীত হয়ে বিরোধী দলের সকল নেতাকর্মীদের নামে মিথ্যা মামলা দেওয়া হচ্ছে। এক একজন নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে দুই-তিনশ মামলা রয়েছে। আবারো নতুন করে গায়েবি মামলা দেওয়া শুরু হয়েছে, যোগ করেন বিএনপির মহাসচিব।
মির্জা ফখরুল আরও বলেন, এখন নতুন ষড়যন্ত্র শুরু করেছে আওয়ামী লীগ। যারা নির্বাচনের প্রার্থী হবেন তাদের বিরুদ্ধে মামলা দিয়ে দ্রুত মামলার কার্যক্রম শেষ করে সাজা দেওয়া হচ্ছে। এই অপকৌশল দেশের মানুষ সহ্য করবে না। আর এ কারণেই এই সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে না।
তিনি বলেন, আবারো অবৈধ সাজানো নির্বাচন করার জন্য রাতের অন্ধকারে তাদের পছন্দমত ডিসি-এসপি নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে। সুতরাং এই সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচন হতে দেওয়া হবে না। আমরা চাই নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন। তার জন্য এই সরকারকে অচিরে পতন ঘটাতে হবে।
বিএনপির মহাসচিব বলেন, সুষ্ঠু নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ভয় পায় বলেই তারা বিরোধী দলের ওপরে হামলা মামলা চালাচ্ছে। সুষ্ঠুভাবে রাজনৈতিক কর্মসূচি পালনে বাধা দিচ্ছে।
‘দেশ বাঁচাতে তারুণ্যের সমাবেশ’ কর্মসূচির আয়োজন করে বিএনপির অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠন জাতীয়তাবাদী যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদল। বেলা দুইটায় সমাবেশের সময় নির্ধারিত থাকলেও শনিবার সকাল থেকেই নেতাকর্মীরা সমাবেশস্থলে আসতে শুরু করেন। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়ে নেতাকর্মীদের উপস্থিতি। দুপুর নাগাদ সমাবেশস্থল কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে ওঠে।
দুপুর ২টায় সমাবেশ শুরু হওয়ার কথা থাকলেও শুরুতেই নেতাদের চাপে ভেঙে পড়ে সমাবেশ মঞ্চ। পরে বিকেল সাড়ে তিনটায় সমাবেশ শুরু হয়। যুবদল সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকুর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশ সঞ্চালনা করেন যুবদলের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক শরিফুল ইসলাম মিল্টন, স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক রাজিব আহসান ও ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক সাইফ মাহমুদ জুয়েল।