সবচেয়ে দীর্ঘ সময় ক্ষমতায় যে ‘রাষ্ট্রনায়ক’
সবচেয়ে বেশি সময় কোনো দেশের শাসনকর্তা হিসেবে অধিষ্ঠিত আছেন রাণী দ্বিতীয় এলিজাবেথ। ব্রিটেনের শাসনভার তার হাতে রয়েছে সবচেয়ে দীর্ঘ সময়। এলিজাবেথ ১৯৫২ সালে সিংহাসনে বসেন। ব্রিটিশ রাজ সিংসহাসনে বসার সময় যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন উইনস্টন চার্চিল। যুক্তরাজ্যের দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধকালীন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে খ্যাত এই চার্চিল রাণী দ্বিতীয় এলিজাবেথের প্রপিতামহী রাণী ভিক্টোরিয়ার সময় ব্রিটিশ সেনাবাহিনীতে ছিলেন।
এর আগে কুইন ভিক্টোরিয়া ব্রিটেনের সবচেয়ে বেশি সময় রাণী হিসেবে সিংহাসনে ছিলেন। ভিক্টোরিয়া কুইন হন মাত্র ১৮ বছর বয়সে এবং সিংহাসনে ছিলেন ২৩ হাজার ২২৬ দিন। আর দ্বিতীয় এলিজাবেথ সিংহাসনে আরোহন করেন ২৫ বছর বয়সে। রানী দ্বিতীয় এলিজাবেথ সিংহাসনে আরোহন করেন ১৯৫২ সালে। রাণী ভিক্টোরিয়ার রাজত্বকালে ১০ জন প্রধানমন্ত্রী দায়িত্ব পালন করেন এবং এলিজাবেথের সময় এখন পর্যন্ত ১২ জন প্রধানমন্ত্রী দায়িত্ব পালন করেন।
রাণী এলিজাবেথের বয়স এখন ৮৯ বছর। ১৯৫২ সালে তিনি সিংহাসনে বসেন। সমাজ ও রাষ্ট্রের পাশাপাশি ব্রিটিশ রাজপরিবারেও ঘটে গেছে নানা পরিবর্তন। ব্রিটিশ রাজপরিবারে এই যে পরিবর্তন, তা কোনো বিপ্লব নয়, আসলে ক্রমবিবর্তন। ১৯৬৯ সালে রাজপরিবার নিয়ে নির্মিত টেলিভিশন প্রামাণচিত্র ‘রয়েল ফ্যামিলি’ এই পরিবারকে ঘিরে থাকা নানা রহস্যের অবসান ঘটায়।
১৯৭৭ সালে রাণী দ্বিতীয় এলিজাবেথের সিংহাসনে বসার রজতজয়ন্তী পালিত হয়। প্রিন্স চার্লসের সঙ্গে ডায়ানা স্পেনসারের বিয়েতেও পুরো দেশ আনন্দে মেতে ওঠে। ১৯৮০-এর দশকে তাদের দুই সন্তানের জন্ম ও ব্রিটিশদের মধ্যে অফুরান আনন্দের সঞ্চার করেছিল। আবার ৯০-এর দশকেই রাজপরিবারের অনেক কিছুই ঘটে যায়।
১৯৯৭ সালে প্যারিসে দুর্ঘটনায় রাজপরিবারের জনপ্রিয় সদস্য প্রিন্সেস ডায়ানার মৃত্যু হলে, রানি তার সবচেয়ে বড় সংকটের মুখে পড়েন। ডায়ানার মৃত্যুর সংবাদ জানার পরও রাণী তার স্কটল্যান্ডের বালমোরাল প্রাসাদে থাকায় গণমাধ্যমে সমালোচনামুখর হয়।
ডায়ানার মৃত্যুর পর সংকটে পরা রাজপরিবার তাদের ভাবমূর্তি সমুন্নত রাখার চেষ্টায় সচেষ্ট হয়। অধ্যাপক মারফি বলেন, রাণীর ব্যক্তিগত ভাবমূর্তি আর যাই হোক, যে কোনো রাজনীতিকের চেয়ে অনেক ওপরে।
এমপি পলফ্লিন বলেছিলেন, রাজপরিবারের অত্যন্ত দক্ষ ও কৌশলী গণসংযোগের মাধ্যমে তাদের ভাবমূর্তি পুনরুদ্ধার করেছে। রাজপরিবারের নতুন প্রজন্মের অনেক সদস্য বিপুলভাবে জনপ্রিয়। রাণীর ব্যক্তিত্ব এবং যে কাজে মাথা ঘামানোর দরকার নেই, তেমন বিষয়ে সহজাত নিস্পৃহতা এই সম্মানও জনপ্রিয়তা অক্ষুন্ন রাখতে সহায়তা করেছে।