নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ হলে দেশ স্যাংসনের কবলে পড়বে : ইসি আনিছুর রহমান
নির্বাচন কমিশনার আনিছুর রহমান বলেছেন, আমরা সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ এবং গ্রহণযোগ্য নির্বাচন করতে চাই। কাউকে খুশি করা বা অখুশি করার জন্য নির্বাচন করতে চাই না। নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ হলে আন্তর্জাতিকভাবে গ্রহণযোগ্যতা হারাবে। এতে দেশ স্যাংসনের কবলে পড়বে। দেশের অর্থনীতি হুমকির মুখে পড়বে। যা কারো জন্য মঙ্গলজনক নয়। তাই নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানে সবার সহযোগিতা প্রয়োজন। জনগণ ভোট দেবে, ভোটের জন্য যে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি সেটা আমরা করতেছি। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে বলেছি যেখানে যেটা দরকার, সেখানে সেটা করবে।
মঙ্গলবার (১৯ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় লক্ষ্মীপুর টাউন হল মিলনায়তনে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন-২০২৪ উপলক্ষে লক্ষ্মীপুর জেলার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীসহ নির্বাচন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা এবং ব্যক্তিবর্গের সঙ্গে বিশেষ আইন শৃঙ্খলা ও মতবিনিময় সভায় তিনি এ কথা বলেন।
আচরণবিধি না মানলে প্রার্থীতা বাতিলের হুঁশিয়ারি দিয়ে নির্বাচন কমিশনার বলেন, আচরণবিধি এ কারণে কাড়াকাড়ি করা হয়েছে, যদি আচরণবিধি প্রতিপালন করানো যায়, তাহলে অনেক অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটবে না।এ নির্বাচন শুধু আমরা দেখছি না, বিশ্ববাসী দেখছে। এ নির্বাচনের ওপর অনেক কিছু নির্ভর করে।
আমাদের দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য আমাদের অর্থনীতি নির্ভর করে। আচরণবিধি না মানলে আমরা প্রার্থীতি বাতিল করে দেব। ভোট বন্ধ করে দেব। পুনঃ নির্বাচন করবো। তবুও সুষ্ঠু ভোট হতে হবে। যতবার দরকার হবে, ততবার করবো। আমরা কাউকে ছাড় দেব না।
প্রার্থীতা বাতিল করে দিলে তখন কিছু করার থাকবে না। যে যত বড় ব্যক্তি হন, আর কিন্তু নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারবেন না। তাই সবাই শান্তি শৃঙ্খলা বজায় রেখে, আইন-শৃঙ্খলা বজায় রেখে প্রচারণা চালান। সহ অবস্থানে থেকে যার যার প্রচারণা চালান। আপনাদের নেতাকর্মীরা কিছু করলেও তার দায়ভার প্রার্থীকেই নিতে হবে।
এ কথা সবার জন্য পরিষ্কার, কোনো রকম ছাড় দেওয়া হবে না। কোনো রকমের অন্যায় করতে পারবেন না। ভোটের বাক্স ছিনতাই করার চিন্তা করলে ভুলে যান। ভোট বাতিল হয়ে যাবে। প্রয়োজনে পুরো আসনের ভোট বাতিল হয়ে যাবে। আমরা গাইবান্ধা-৫ আসনে যেটা করেছি।
প্রার্থীদের উদ্দেশ্যে আরও বলেন, আপনারা ভোটকেন্দ্র পাহারা দেবেন। ভোটার উপস্থিতি নিশ্চিত করবেন। ভোটার আনার জন্য কিন্তু আপনাদের কাজ করতে হবে। সেজন্য স্বতন্ত্র প্রার্থী দিয়েছে। আমরাও চাই, স্বতন্ত্র প্রার্থী থাকুক। কত শতাংশ ভোটার উপস্থিত হলে ভোট সুষ্ঠু বা অসুষ্ঠু হবে, সেটা কিন্তু সংবিধানে বলা নেই। যে পরিমাণ ভোটার উপস্থিতি থাকবে, সেটা ৫ ভাগ, ১০ ভাগ বা ২০ ভাগই হোক। আমরা সবাই একতাবদ্ধ হয়ে শান্তিপূর্ণ নির্বাচন করবো।
নির্বাচনে যারা আওয়ামী লীগ ও মহাজোটের প্রার্থী তাদের দায়িত্ব সবচেয়ে বেশি। কারণ যেকোনো ধরনের ঘটনা ঘটলে পুরো দায় সরকারের ওপর চলে যায়। নির্বাচনে আচরণবিধি অবশ্যই মেনে চলতে হবে।
দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের লক্ষ্মীপুর জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক সুরাইয়া জাহানের সভাপতিত্বে এতে বিশেষ অতিথি ছিলেন কুমিল্লা আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা ফরহাদ হোসেন ও লক্ষ্মীপুর জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ তারেক বিন রশিদ।
প্রার্থীদের মধ্যে বক্তব্য দেন- লক্ষ্মীপুর-১ আসনের প্রার্থী ড, আনোয়ার হোসেন খান (নৌকা), এমএ গোফরান (কেটলি), হাবিবুর রহমান পবন (ঈগল), লক্ষ্মীপুর-২ আসনের প্রার্থী নুরউদ্দিন চৌধুরী নয়ন (নৌকা), বোরহান উদ্দিন আহমেদ মিঠু (লাঙল), লক্ষ্মীপুর-৩ আসনের প্রার্থী গোলাম ফারুক পিংকু (নৌকা), এমএ সাত্তার (ট্রাক), মোহাম্মদ রাকিব হোসেন (লাঙল), লক্ষ্মীপুর-৪ আসনের প্রার্থী মোশারফ হোসেন (নৌকা) ও ইস্কান্দার মির্জা শামীম (ট্রাক) প্রমুখ।