মাশরাফি-তাসকিনের চোখের জল গড়াল তামিম পর্যন্ত
বিশ্বকাপ শুরুর একেবারে আগমুহূর্তে দল ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। ফলে দল ঘোষণায় বাংলাদেশের অবস্থান সবার শেষে। গতকাল পর্যন্ত বিশ্বকাপের জন্য প্রতিযোগী ৮টি দেশই স্কোয়াড ঘোষণা করেছিল। সর্বশেষ আজ (মঙ্গলবার) বিকেলে সেই পথে হাঁটে শ্রীলঙ্কা। অনেক নাটকীয়তা শেষে ১৫ সদস্যের স্কোয়াড সামনে এসেছে বাংলাদেশের। যেখানে আগের দুটি বিশ্বকাপের চিত্রের সঙ্গে একটি মিল খুঁজে পাওয়া গেছে। মাশরাফি বিন মুর্তজা এবং তাসকিন আহমেদের পর সেই চিত্রের অন্যতম নায়ক তামিম ইকবাল!
দেশসেরা ওপেনারকে বাইরে রেখেই আসন্ন ভারত বিশ্বকাপের জন্য দল ঘোষণা করা হয়েছে। সাকিব আল হাসানের নেতৃত্বাধীন দলটিতে সহ-অধিনায়ক করা হয়েছে নাজমুল হোসেন শান্তকে। তবে বড় খবর কয়েকদিন ধরে নাটকের পর অবসর ভেঙে নাটকীয় প্রত্যাবর্তন হওয়া তামিমের বাদ পড়ার বিষয়টি। হঠাৎ করে অবসর নেওয়ার পর তামিমকে ফেরানো হয় প্রধানমন্ত্রীর আহবানে।
এরপর তিনি দুই মাস চোট সারানোর জন্য সময়ও নিয়েছিলেন। সর্বশেষ নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম দুই ওয়ানডেতে মাঠে নামেন তামিম। প্রথম ম্যাচে ব্যাট না পেলেও দ্বিতীয় ওয়ানডেতে দেশসেরা এই ব্যাটার করেছিলেন ৪৪ রান। এরপর নতুন করে প্রশ্ন উঠেছে এশিয়া কাপের পর বিশ্বকাপও না খেলা হলে অবসর থেকে কেন ফেরানো হলো তামিমকে?
এর আগে চোটের কারণে চোখের জল ঝরেছিল বেশ কয়েকজন তারকা ক্রিকেটারের। যারা ঝরে পড়েছিলেন বিশ্বকাপ আসর থেকে। ২০১১ বিশ্বকাপে ঘরের মাঠে খেলেছিল বাংলাদেশ। যেখানে টুর্নামেন্ট শুরুর আগে চোটে পড়েন মাশরাফি বিন মুর্তজা। তবুও তিনি বিশ্বকাপে খেলার স্বপ্ন দেখেছিলেন। শেষ পর্যন্ত সাকিব আল হাসানকে অধিনায়ক করার মাধ্যমে ছিটকে যাওয়া নিশ্চিত হয় মাশরাফির। যেখানে সহ-অধিনায়ক করা হয় তামিমকে। দল থেকে বাদ পড়ার পর মিরপুর শের-ই বাংলা স্টেডিয়ামে মাশরাফির সেই কান্না আজও দেশের ক্রিকেটভক্তদের মনে থাকার কথা।
এরপর ২০১৫ বিশ্বকাপ আসর থেকে ছিটকে যাওয়ার পথ তৈরি হয়েছিল পেসার রুবেল হোসেনের। আইনি ঝামেলায় জড়িয়ে ওই বছরের ৮ জানুয়ারি জেলে গিয়েছিলেন পেসার রুবেল হোসেন। পরে জামিন নিয়ে বিশ্বকাপে খেলতে গিয়েছিলেন রুবেল। এক্ষেত্রে তাকে কিছুটা ভাগ্যবানই বলা যেতে পারে। পরবর্তী সময়ে বিশ্বকাপেও বল হাতে আস্থার প্রতিদান দিয়েছিলেন রুবেল।
বর্তমানে বাংলাদেশের প্রধান তারকা পেসার তাসকিন আহমেদ। তাকেও তিক্ত অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হতে হয়েছিল ২০১৯ বিশ্বকাপে। সেবার দল ঘোষণার আগেই চোট থেকে সেরে উঠেন তাসকিন। কিন্তু ম্যাচের ফিটনেস নেই বলে নির্বাচকরা তাকে স্কোয়াডের বাইরে রাখার সিদ্ধান্ত নেন। সে কারণে বিশ্বকাপ দলে সুযোগ না পেয়ে অঝোরে কেঁদেছিলেন তাসকিন।
অতীত ঘাটলে জানা যায়, এ ধরনের পরিস্থিতি বাংলাদেশ ক্রিকেট আগে থেকেই মোকাবিলা করে আসছে। বর্তমানে বাংলাদেশের প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদীনের দলে অর্ন্তভুক্তি নিয়েও প্রচুর বিতর্ক হয়েছিল। তাকে দলে রেখেই ১৯৯৯ সালের বিশ্বকাপে অভিষেক হয় বাংলাদেশের। এরপর ২০০৭ বিশ্বকাপে উইকেট কিপিং কে করবেন তা নিয়ে শুরু হয় তুমুল আলোচনা-সমালোচনা। যেখানে প্রার্থী ছিলেন মুশফিকুর রহিম ও খালেদ মাসুদ পাইলট।