বৃষ্টি বিড়ম্বনায়ও ভৈরব-টু-সিলেট রোডমার্চে হাজার হাজার নেতাকর্মী ও সাধারন জনগন,ভোট চোরকে মানুষ বিশ্বাস করে না : সিলেটে সমাবেশে সাবেক মন্ত্রী গয়েশ্বর
দুপুর গড়াতেই ঝমঝম বৃষ্টি, সমাবেশ শেষ অবধি ঝিরঝির বৃষ্টি বিড়ম্বনার মধ্যে সম্পন্ন হয়েছে ভৈরব-টু-সিলেট তারুণ্যের রোডমার্চ। এতে নির্ধারিত সময়ক্ষণ বিকেল ৫টার পরিবর্তে রাত সাড়ে ৮টায় শেষ হয় সমাবেশের কার্যক্রম। তারপর বৃষ্টিকে উপেক্ষা করে হাজার হাজার নেতাকর্মী ও সাধারন জনগন প্রাণবন্ত রাখে সামবেশ স্থল। কাকভেজা শরীর নিয়েও তেজদীপ্ত স্লোগানে মুখরিত করে তোলে গোটা আলিয়া মাদ্রাসা মাঠ। আজ সকালে ভৈরর শুরু হওয়া রোডমার্চ রাত পৌনে ৮টায় সিলেট সরকারি আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে এসে পৌঁছে। এসময় সমেবেত জনতা মুহুর্মুহু করতালি ও স্লোগান দিয়ে রোডমার্চের গাড়ি বহরকে স্বাগত জানান।
অবিলম্বে মাদার অব ডেমোক্রেসী বেগম খালেদা জিয়ার অন্যায় বন্দিত্ব অবসান, ফ্যাসিস্ট অবৈধ সরকারের পদত্যাগ ও সংসদ বিলুপ্ত, নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের- এক দফা দাবীতে ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের সমন্বয়ে বৈরব বাক্ষ্রণবাড়িয়া-হবিগঞ্জ-মৌলভীবাজার-সিলেট অভিমুখে ছিল এ রোডমার্চ পরবর্তী সিলেট সমাবেশে বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেছেন, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া গুরুতর অসুস্থ, দেশনায়ক তারেক রহমান দেশে ফিরতে পারছেন না। দেশে গণতন্ত্র নেই, মানুষ ভোট দিতে পারে না, দিনের ভোট রাতে হয়ে যায়, দেশের টাকা বিদেশে পাচার করা হচ্ছে। তাই মানুষ শেখ হাসিনাকে আর এক মুহুর্তও ক্ষমতা দেখতে চায় না। তাই শেখ হাসিনার অধিনে দেশে কোন নির্বাচন হবে না, দেশের মানুষ হতে দেবে না। তিনি আরো বলেন, আমরা শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালন করছি যা শেখ হাসিনা বুঝতে পারছে না। এখন শক্ত কর্মসূচি দিতে হবে, আর তা হচ্ছে হরতাল। আমরা আওয়ামীলীগের মতো লগি বৈঠা দিয়ে মানুষ মারি নাই, লাশের উপর নিত্য করি নাই। তিনি বলেন, ভোট চোরকে মানুষ বিশ্বাস করে না। শেখ হাসিনা ও আওয়ামীলীগ ছাড়া কেউ ভোট চুরি করে না।
আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে নগরীর সরকারি আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে অনুষ্ঠিত সমাবেশে সিলেট জেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরীর স্বাগত বক্তব্যের মধ্য দিয়ে সূচিত সভায় সভাপতিত্ব করেন মহানগর বিএনপির সভাপতি নাসিম হোসাইন। সিলেট জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট এমরান আহমদ চৌধুরী ও মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ইমদাদ হোসেন চৌধুরীর যৌথ সঞ্চালনায় প্রধান বক্তার বক্তব্যে বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, এক দফা এক দাবীতে এই রোডমার্চ, তা হলো ফ্যাসিস্ট সরকারের পদত্যাগ। দেশের মানুষ শেখ হাসিনাকে বিদায় দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তারা এই সরকারের অধিনে নির্বাচনে যাবে না। দেশের মানুষের সাথে একাত্মতা প্রকাশ করে জাতিসংঘ, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ইউরোপীয় ইউনিয়ন সহ সবাই সিদ্ধান্ত নিয়েছে শেখ হাসিনার অধিনে নির্বাচন হলে কোন পর্যবেক্ষক পাঠাবে না। কারন তারা জানে দেশে সুষ্ঠু নির্বাচনের কোন পরিবেশ নাই।
সমাবেশে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন- বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন, বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা খন্দকার আব্দুল মুক্তাদির, আরিফুল হক চৌধুরী ও ড. এনামুল হক চৌধুরী, বিএনপির যুগ্ন মহাসচিব হাবিবুন্নবী খান সোহেল ও খায়রুল কবির খোকন, সাংগঠনিক সম্পাদক ডা. শাখাওয়াত হাসান জীবন ও এমরান সালেহ প্রিন্স, সহ সাংগঠনিক সম্পাদক কলিম উদ্দিন মিলন, সহ ক্ষুদ্র ঋণ বিষয়ক সম্পাদক আব্দুর রাজ্জাক, জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য আবুল কাহের চৌধুরী শামীম, মিজানুর রহমান চৌধুরী ও হাদিয়া চৌধুরী মুন্নী।
রোডমার্চকে বরণ করতে বিকেল ৩টা থেকেই আলিয়ার মাঠে ঝড়ো হতে থাকেন বিএনপি ও অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মী সহ মুক্তিকামী হাজার হাজার জনতা। বিকেল ৪টার পূর্বেই মুহুর্মুহু বৃষ্টি উপেক্ষা করে আলিয়া মাদ্রাসা মাঠ কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায়। দীর্ঘ সময় অপেক্ষমান নেতাকর্মীদের উজ্জীবিত রাখতে মঞ্চ থেকে বিভিন্ন দেশাত্মবোধক গান পরিবেশন করেন জাসাস এর শিল্পীবৃন্দ। সমাবেশে বক্তব্য রাখেন- যুবদলের সভাপতি সুলতান সালাহউদ্দিন টুকু, স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এস.এম জিলানী, যুবদলের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম মিল্টন, স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক রাজিব আহসান, ছাত্রদলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রাশেদ ইকবাল খান, সাধারণ সম্পাদক সাইফ মাহমুদ জুয়েল।
সিলেট জেলা ও মহানগর বিএনপি, অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দের মধ্যে বক্তব্য রাখেন- এডভোকেট আশিক উদ্দিন, মামুনুর রশিদ মামুন, মিফতাহ সিদ্দিকী, রেজাউল হাসান কয়েস লোদী, নজিবুর রহমান নজিব, হাসান আহমদ পাটোয়ারী রিপন, সিদ্দিকুর রহমান পাপলু, শামীম আহমদ, সৈয়দ সাফেক মাহবুব, মকসুদ আহমদ, এডভোকেট মুমিনুল ইসলাম মুমিন, শাহনেওয়াজ বক্ত তারেক, মির্জা সম্রাট হোসেন, মাহবুবুল হক চৌধুরী, শাকিল মোর্শেদ, আফসর খান, তাহসিন শারমিন তামান্না, নিগার সুলতানা ডেইজী, নিজাম উদ্দিন তরফদার, সুরমান আলী, জাহাঙ্গীর হোসেন জীবন, সুদীপ জ্যোতি এষ, দেলোয়ার হোসেন দিনার, ফজলে রাব্বি আহসান প্রমূখ।