দেশের বাইরে পড়তে যেতে চাইলে জেনে নিন

0
2
Array

বিদেশে গিয়ে উচ্চশিক্ষা অর্জনের স্বপ্ন থাকে অনেকেরই। এ স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে প্রয়োজন সঠিক প্রস্তুতির। ভালো ফল করার পাশাপাশি প্রয়োজন মানসিক প্রস্তুতিও।

এদেশের আবহাওয়ার সঙ্গে ইউরোপ-আমেরিকা, জাপান কিংবা চীনের আবহাওয়ার পার্থক্য অনেক। আবহাওয়া পরিবর্তনে নিজেকে শারীরিক ও মানসিকভাবে মানিয়ে নিতে হবে। বাইরের দেশের খাবারে অভ্যস্ততা আনতে হবে। নিজের সব বিষয়ে নিজেকেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে। কারণ ওখানে পরিবারের কেউ থাকছে না। প্রয়োজনে সব কাজ নিজেকেই করতে হবে।

গবেষণানির্ভর বিষয়গুলোতে প্রচুর পড়তে হয়। বাংলাদেশে এত কাজ করতে হয় না, যেহেতু সেখানে অত গভীর গবেষণা নেই। এই চাপটা সহজভাবে নিতে হবে। মানসিক যন্ত্রণায় ভুগলে হবে না। দিনে অন্তত ১০ ঘণ্টা কাজ করতে হবে, সপ্তাহে কমপক্ষে ছয় দিন, অবশ্য প্রয়োজন অনুসারে কাজের চাপ ভিন্ন হতে পারে।

প্রবাসে একাকিত্ব অনুভব করেন অনেকেই। গৃহমায়া বা হোম সিকনেস  থাকে। পারিবারিক একটি বন্ধন থেকে অনেক দূরে এসে একা মনে হয়। এসব বিষয় অনেক সময় কাজের ওপর প্রভাব ফেলে। দূরদেশ থেকে চাইলেই যখন-তখন দেশে যাওয়া যায় না। জীবনে অর্জন করতে গেলে অনেক কিছু বিসর্জন দিতে হয়। এটা হাসিমুখে মেনে নেয়ার মানসিকতা থাকতে হবে।

মানসিক প্রস্তুতির জন্য এগুলো জানা থাকা উচিত। সঠিক, সর্বোচ্চ প্রস্তুতি মানেই সেরা ফল। শুধু স্বপ্ন দেখলে হয় না। প্রয়োজন হয় সঠিক প্রস্তুতির। আর প্রস্তুতির জন্য সুগম ও দুর্গম সব পথই জানতে হয়। বাইরের দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পড়তে বহু খরচ গুণতে হয়। জেনে নিন এমনই কয়েকটি দেশের পড়াশোনার খরচ।

১. জাপান : মোট টিউশন ফি ২৪ হাজার ডলার। এ দেশে ৫০০টি কলেজ ও ইউনিভার্সিটি আছে। গণিত, বিজ্ঞান, প্রকৌশল ইত্যাদি বিষয়ে উচ্চশিক্ষা অর্জন বেশ খরচবহুল।

২. সিঙ্গাপুর : মোট টিউশন ফি ৩৫ হাজার ৪০০ ডলার। এই দ্বীপরাষ্ট্রে চিকিৎসাবিজ্ঞান এবং বিজ্ঞান বিষয়ে পড়তে অনেক টাকা লাগে।

৩. ব্রিটেন : মোট টিউশন ফি ৪০ হাজার ২৯০ ডলার। এখানে উচ্চশিক্ষা অর্জনে এতো বেশি খরচ যে, একটি পরিবারের আয়ের প্রায় অর্ধেক চলে যায় এ খাতে।

৪. লিথুনিয়া : মোট টিউশন ফি ২৩ হাজার ৯০৪ ডলার। ২০০৯ সালে দেশটির রাজধানী ভিলনিয়াসে শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ করেন। তাদের দাবি ছিল, উচ্চশিক্ষা অর্জনে যেন খরচ না বাড়ানো হয়। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তাই ঘটেছে।

৫. ইউক্রেন : মোট টিউশন ফি ২৩ হাজার ২০০ ডলার। এ অনেকগুলো বিশ্ববিদ্যালয় আছে। ইতালি, জার্মানি, ফ্রান্স, পোল্যান্ড এবং বেলজিয়ামের মোট বিশ্ববিদ্যালয়ের চেয়ে বেশি সংখ্যক আছে ইউক্রেনে। বিগত ৩ বছর এ দেশের ইউনিভার্সিটির সংখ্যা ২০০টি থেকে ৯০০টিতে উপনীত হয়েছে।

৬. আমেরিকা : মোট টিউশন ফি ৯১ হাজার ৮৩২ ডলার। এ দেশের বেশ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয় বিশ্বের সেরাদের তালিকায় রয়েছে। এখানে পড়ার খরচও সবচেয়ে বেশি।

৭. মালয়েশিয়া : মোট টিউশন ফি ১৮ হাজার ডলার। এখানে ২০টি বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে। স্কলারশিপ অথবা ঋণ ছাড়া অভিভাবকদের আয়ের অর্ধেক দিতে হয় সন্তানের লেখাপড়ার খরচে।

৮. চিলি : মোট টিউশন ফি ২৩ হাজার ৬০০ ডলার। ২০১১-২০১৩ সালের মধ্যে এ নিয়ে ব্যাপ বিক্ষোভ হয়। দরিদ্র পরিবারের ছেলেমেয়েদের শিক্ষা অর্জনে বাধা হয়ে দাঁড়ায় মুনাফালোভী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো। এখানকার সাধারণ পরিবারকে সর্বস্ব দিয়ে লেখপড়ার খরচ জোগাতে হয়।

৯. এস্তোনিয়া : মোট টিউশন ফি ৩৮ হাজার ৪০০ ডলার। ১৯৯০-এর দশক থেকে সেখানে বিজ্ঞান, গণিত, প্রযুক্তি ও প্রকৌশল বিষয় শিক্ষার্থীদের সংখ্যা আশঙ্কজনক হারে কমে যায়। ২০১১ সালে সরকার এসব বিষয়ে শিক্ষার্থীদের সংখ্যা বৃদ্ধিতে বিশেষ ব্যবস্থা নেয়।

১০. রোমানিয়া : মোট টিউশন ফি ২৫ হাজার ২০০ ডলার। চিকিৎসাবিজ্ঞানে লেখাপড়ার খরচ এখানে অনেক। এ ছাড়া উচ্চশিক্ষায় অন্যান্য বিষয়ে লেখাপড়া করতেও অনেক খরচ।

১১. হাঙ্গেরি : মোট টিউশন ফি ৩৪ হাজার ২০০ ডলার। প্রতিবছর পরিবারগুলো দেশের গড় আয়ের পুরোটাই দেয় লেখপড়ার পেছনে। যাদের সঞ্চয় নেই, তাদের ঋণ ছাড়া লেখপড়া করা কঠিন বিষয়।

About Author

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

  • Click to Chat
  • Click to Chat
  • Click to Chat
  • Click to Chat