নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে হবে

ক্ষমতাসীন সরকারের দুঃশাসনের নাগপাশ থেকে মুক্তির অপেক্ষায় ছটফট করছে দেশের সাধারণ মানুষ। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, মানবাধিকার ও ভোটাধিকার হরণ, ধর্ম পালনের স্বাধীনতা সঙ্কুচিতকরণ, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা খর্ব, রাজনৈতিক সভা-সমাবেশ ও মতপ্রকাশের অধিকার দলন, উন্নয়নের আড়ালে জনগণের অর্থসম্পদ লুটপাট, ব্যাংক ডাকাতি, সীমাহীন অর্থপাচার, রিজার্ভ নয়-ছয়, বিদ্যুৎ খাতে ভয়াবহ লুটেরা মডেল চালুসহ এমন বহু অপকর্মের মাধ্যমে দেশে মাফিয়াতন্ত্র কায়েম করেছে এই ফ্যাসিস্ট সরকার। শুধু তাই নয়, প্রতিবাদী আলেম-ওলামাকে জেল-জুলুম ও মামলার পর মামলা দিয়ে নিষ্পেষিত করা হচ্ছে। এই পরিস্থিতি থেকে দেশের জনগণ মুক্তি চায়। দেশের মানুষ এখন সুষ্ঠু ভোটে নির্বাচিত একটি জনপ্রতিনিধিত্বশীল সরকার চায়।
নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনের নির্বাচন দিতে হবে। দলীয় সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচন মেনে নিবে না। দেশ চলছে ‘ডিজিটাল’ ভোট চোর ও ‘স্মার্ট’ ডাকাতদের রাজত্ব। এদেশে নাগরিকদের ভোটাধিকার হাইজ্যাক করা হয়েছে। জুলুম, জবরদস্তি ও ভোট ডাকাতি করে দিনের নির্বাচন রাতে করাটা ক্ষমতাসীন রাজনীতির অবৈধ শক্তির ভিত্তিতে পরিণত হয়েছে। বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টির উদ্যোগে গতকাল রোববার জাতীয় প্রেসক্লাবে “বহুমূখী সঙ্কটে বাংলাদেশ: উত্তরণ কোন পথে” শীর্ষক এক আলোচনা সভায় নেতৃবৃন্দ এসব কথা বলেন। এতে সভাপতিত্ব করেন নেজামে ইসলাম পার্টির আমীর আল্লামা ছরওয়ার কামাল আজিজী।
এতে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মোহাম্মদ ইবরাহীম বীর প্রতীক, খেলাফত মজলিসের আমীর মাওলানা আব্দুল বাসিত আজাদ, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মাওলানা জালালুদ্দিন আহমদ, এবি পার্টির সদস্য সচিব মজিবুর রহমান মঞ্জু, তাহাফফুজে খতমে নবুওয়তের মহাসচিব মাওলানা মহিউদ্দিন রব্বানী, হেফাজত নেতা মাওলানা আব্দুল কাইয়ুম সুবহানী, মুফতী জসীম উদ্দিন, মাওলানা আহমদ আলী কাসেমী, ড. খলিলুর রহমান মাদানী, নেজামে ইসলাম পার্টির নায়েবে আমীর আব্দুর রহমান চৌধুরী, মাওলানা আব্দুল খালেক নিজামী, মুফতী মুহাম্মদ আলী, যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মুস্তাফিজুর রহমান মাহমুদী, মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদী, মাওলানা আবু তাহের খান, মাওলানা ইনামুল হক কুতুবী, আলহাজ আনোয়ারুল কবির, মাওলানা আবদুল্লাহ আল মাসউদ খান, মুফতী দ্বীনে আলম হারুনী, নেতৃবৃন্দ বলেন, উন্নয়নের মিথ্যা ফানুস উড়ানোর এক ভয়ঙ্কর অপরাজনৈতিক সংস্কৃতি চালু করেছে শাসকরা। এর বিরুদ্ধে দেশের সকল ইনসাফকামী মানুষকে একজোট হয়ে প্রতিবাদে ঝাপিয়ে পড়তে হবে। অবিলম্বে মাওলানা মামুনুল হকসহ কারাবন্দি সকল আলেমদের মুক্তি দিতে হবে।
নেতৃবৃন্দ বলেন, মাওলানা মামুনুল হকসহ মুক্তি পাননি এমন আরো অনেক প্রতিবাদী আলেম এখনো বিনা বিচারে মিথ্যা-বানোয়াট মামলায় কারাগারে ধুঁকছেন এবং তাদেরকে নানারকম হয়রানি ও অমানুষিক নির্যাতন করা হচ্ছে। প্রতিনিয়ত তাদের মানবাধিকার লঙ্ঘন ঘটছে। অন্যায়-অবিচারের প্রতিবাদ করার অধিকার আলেমদের থেকেও কেড়ে নেয়া হয়েছে। আজ প্রতিটি বন্দি আলেমের মুক্তির দাবি গণদাবিতে পরিণত হয়েছে। ছাপ্পান্ন হাজার বর্গমাইলের একটি স্বাধীন ভূমিকেও আজ কারাগারে পরিণত করা হয়েছে। এই অবস্থা থেকে মুক্তি পেতে হলে জনপ্রতিনিধিত্বশীল সরকারের কোনো বিকল্প নেই ।