যারাই দুর্নীতি করবে ধরবো : প্রধানমন্ত্রী

0
11-1719672555
Array

সরকার দুর্নীতির বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করেছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, দুর্নীতি করলে কারো রক্ষা নেই। শনিবার জাতীয় সংসদের অধিবেশনে ২০২৪-২০২৫ সালের প্রস্তাবিত বাজেটের উপর সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে সংসদ নেতা এ কথা বলেন। এ সময় অধিবেশনের সভাপতিত্ব করেন জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা দুর্নীতির বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করেছি, সে যেই হোক দুর্নীতি করলে কারো রক্ষা নেই। যারাই দুর্নীতি করবে ধরবো। কালো টাকা সাদা করার সুযোগ প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, কালো টাকা সাদাটা, কালো টাকা সাদা না। এখন সব দেশে দাম বেড়ে গেছে। এখন এক কাঠা জমি যার আছে সেই কয়েক কোটি টাকার মালিক, ঢাকা শহরে একটা কাঠা জমি থাকলে কয়েক কোটি টাকার মালিক। এভাবে অনেক সময় কিছু করতে গেলে অতিরিক্ত অর্থ চলে আসে। সেটা তারা বাজেটে দেখাতে পারে না। সেটা তারা আয় কর দিতে পারে না।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আয়কর দিয়ে যাতে তারা মূল জনগোষ্ঠীতে ফিরে আসে, আর এই ধরনের কর্মকাণ্ড যাতে না করে, সেই জন্যই মাঝে মাঝে এ ধরনের সুযোগ দেয়া হয়। অতীতে খালেদা জিয়াও এই সুযোগ নিয়েছিলেন জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, এই ধরনের সুযোগ খালেদা জিয়া নিয়েছিল, ড. কামাল হোসেন নিয়েছিল এবং আরও অনেকে নিয়েছিল। তারাও কিন্তু এ রকমভাবে সেই ২০০৭/ ২০০৮ বা তার পরবর্তীতে এভাবে কিন্তু তারা বৈধ করে নিয়েছিল। এমনকি বিএনপির সাইফুর রহমানও করেছে। এরশাদ সাহেবও বোধ হয় করেছিলেন। মনে হয় একটু খোঁজ নিতে হবে। আমি জানি না আমাদের বিরোধী দলের নেতাও করেছিলেন কি না। বাংলাদেশের জনগণের প্রশংসা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের জনগণ অত্যন্ত কর্মঠ, অত্যন্ত সৃজনশীল, কিছু কিছু মাঝখানে দুষ্টু প্রকৃতির থাকে ওগুলো আমরা ধর্তব্যে নেই না।

এবারের বাজেট বাস্তবায়নের মধ্যে দিয়ে বাংলাদেশ আরও এক ধাপ এগিয়ে যাবে আশা প্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই বাজেটকে মোটেও উচ্চবিলাসি মনে করি না। কেউ কেউ বাজেটকে উচ্চাভিলাসি বলেছে। কেউ বলেছে ঘাটতি বাজেট। আবার কিছুক্ষণ আগে বিরোধী দলীয় নেতাও বললেন এই বাজেট বাস্তবায়ন সম্ভব নয়। বলেছেন এই চ্যালেঞ্জ নেয়ার সক্ষমতা আমাদের আছে কিনা। চ্যালেঞ্জ নেয়াটাই তো আমাদের কাজ। আমরা তো চ্যালেঞ্জ নিয়েই চলতে চাই এবং চ্যালেঞ্জ নিয়েই এগিয়ে যাচ্ছি। সরকার প্রধান বলেন, মোটেই এই বাজেটকে উচ্চাভিলাসি মনে করি না। হ্যাঁ, একটা লক্ষ্য আমরা স্থির করি, শতভাগ কখনো পূরণ হয় না, হওয়া সম্ভব নয়। তারপরও আমাদের সুনির্দিষ্ট একটা লক্ষ্য থাকে যে এখানে আমরা যাবো। সেটা আমরা যেতে পেরেছি। তিনি বলেন, কোথায় ৬২ হাজার কোটি টাকার বাজেট, আর কোথায় ৭ লাখ কোটি টাকার বাজেট। আমরা তো এই জায়গায় আসতে পেরেছি। চ্যালেঞ্জ নিয়েছি বলেই না সম্ভব হয়েছে। শেখ হাসিনা বলেন,আমাদের ইচ্ছাটা কি? দেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন। সেজন্যই তো উন্নয়নটা হয়। আমাদের উন্নয়নের থারা যেন অব্যাহত থাকে সে লক্ষ্যেই আমরা এই বাজেট প্রণয়ন করেছি, এবং উন্নয়ন বাজেট দিয়েছি। তিনি বলেন, বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় বাজেট আমরা দিয়েছি। বাজেটের আকার ৭ লক্ষ ৯৭ হাজার কোটি টাকা। আওয়ামী লীগ সরকার নির্বাচনী ইশতেহার ভুলে যায় না মন্তব্য করে শেখ হাসিনা বলেন,নির্বাচনের আগে আমরা একটা ইশতেহার দেই। এই ইশতেহার কিন্তু আমরা ভুলে যাই না। জাতির যে ওয়াদা দিয়ে, জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়ে আমরা ক্ষমতা এসেছি তা আমরা পালন করি। এই বাজেট উন্নত-সমৃদ্ধ স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ারই পদক্ষেপ মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আগামী ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে ক্ষুধা, দারিদ্র মুক্ত, উন্নত, সমৃদ্ধ স্মার্ট সোনার বাংলা আমরা যে গড়ে তুলবো তারই পদক্ষেপ হিসেবে এই বাজেটে বিভিন্ন যে লক্ষ্য আমরা স্থির করেছি সেগুলো তুলে ধরা হয়েছে। আমি মনে করি এই বাজেটের মধ্যে দিয়ে আগামী দিনে আমরা যে প্রেক্ষিত পরিকল্পনা করেছি ২০৪১ পর্যন্ত তা বাস্তবায়ন করতে সক্ষম হবো। সেই ধারাবাহিকতা আমাদের আছে। ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটের ওপর বিরোধী দলীয় নেতাসহ ২৩৪ জন এমপি বক্তব্য রাখেন বলে জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেট গত ৬ জুন প্রস্তাব করেন অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী। এ নিয়ে গত ১১ জুন থেকে আলোচনায় অংশ নেন আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টি, অন্যান্য দল ও স্বতন্ত্র এমপিরা। মোট ১১ দিন আলোচনায় অংশ নেন তারা।

About Author

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

  • Click to Chat
  • Click to Chat
  • Click to Chat
  • Click to Chat