অতীতের সব রেকর্ড ভাঙলো ডলার, বিক্রি হচ্ছে ১২৬ টাকা ৫০ পয়সায়

0
Dollar-2302150206-2311091056
Array

ডলারের দাম বেড়েই চলেছে। আজ বৃহস্পতিবার (৯ নভেম্বর) খোলাবাজারে প্রতি ডলার বিক্রি হচ্ছে ১২৬ টাকা ৫০ পয়সায়। এর আগে কখনো ডলারের দর এতো উঠেনি বলে কেন্দ্রীয় ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে। আজ একদিনেই বেড়েছে সর্বোচ্চ সাড়ে ৪ টাকা।

গতকাল বুধবার প্রতি মার্কিন ডলার ১২২ থেকে ১২৩ টাকায় বিক্রি হচ্ছিলো। ব্যাংকগুলো বিদেশি এক্সচেঞ্জ হাউজ থেকে ১২২ টাকার বেশি দরে ডলার কেনার বিষয়টি জানাজানির পর আজ খোলাবাজারে নগদ ডলারের দর একদিনেই বেড়েছে ৪ থেকে সাড়ে ৪ টাকা পর্যন্ত। গত সপ্তাহেও প্রতি ডলার ১১৮ থেকে ১২০ টাকার মধ্যে ছিল।

কেন্দ্রীয় ব্যাংক ডলার সঙ্কটের এ সময়ে দর নিয়ন্ত্রণে বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছে। তারই অংশ হিসেবে বুধবার (৮ নভেম্বর) সন্ধ্যায় ব্যাংকের প্রধান নির্বাহীদের সংগঠন এবিবি ও বৈদেশিক মুদ্রা লেনদেনকারী ব্যাংকের সংগঠন বাফেদার যৌথ সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

জানা গেছে, এবিবি-বাফেদার বৈঠকটি বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় শুরু হয়ে পৌনে ৭টার দিকে শেষ হয়। সংক্ষিপ্ত এ বৈঠকে শরীয়াহভিত্তিক একটি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ব্যাংকারদের গণমাধ্যমে কোনো বক্তব্য না দেওয়ার প্রস্তাব করেন। যদিও এর পক্ষে-বিপক্ষে কেউ কিছু বলেননি।

নানা উদ্যোগ নেওয়ার পরও ডলার সংকট কমছে না, বরং বাড়ছে। ব্যাংকের প্রধান নির্বাহীদের সংগঠন এবিবি ও বৈদেশিক মুদ্রা লেনদেনকারী ব্যাংকের সংগঠন বাফেদা গত ১ সেপ্টেম্বর প্রতি ডলারে ৫০ পয়সা বাড়িয়ে রপ্তানি ও রেমিট্যান্সে ১১০ টাকা ৫০ পয়সায় নির্ধারণ করে। এর সঙ্গে রেমিট্যান্সে ব্যাংকগুলো নিজেদের মতো করে প্রণোদনা দিতে পারবে বলে জানানো হয়। তবে বেশিরভাগ ব্যাংক এ দরে ডলার পাচ্ছে না। এখন ১২২ টাকা ৫০ পয়সা পর্যন্ত দরে ডলার কিনছে অনেক ব্যাংক।

বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদিত দর অনুযায়ী, রেমিট্যান্স আনার জন্য ব্যাংকগুলোর ডলারপ্রতি সর্বোচ্চ ১১০ টাকা ৫০ পয়সা দেয়ার কথা। যদিও দেশের অনেক ব্যাংকই এখন ডলারপ্রতি ১২৪ টাকা ৩৫ পয়সা পর্যন্ত পরিশোধ করছে। ব্যাংকগুলো এখন খুচরা বাজারের (কার্ব মার্কেট) চেয়েও বাড়তি দরে ডলার সংগ্রহ করছে। কার্ব মার্কেটে গতকাল প্রতি ডলার লেনদেন হয়েছে ১১৯ থেকে ১২০ টাকায়। তবে এখানেও গতকাল ডলারের তীব্র সংকট ছিল বলে জানিয়েছেন গ্রাহকরা।

অনুসন্ধানে দেখা গেছে, দেশের ব্যাংকগুলোর কাছে মঙ্গলবার মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক মানি এক্সচেঞ্জগুলো প্রতি ডলার ১২২ টাকা ৫০ পয়সা থেকে ১২৩ টাকা ৬০ পয়সা পর্যন্ত প্রস্তাব করেছে। তবে লেনদেন হয়েছে ১২৩ টাকার বেশি দরে। আন্তর্জাতিক মানি এক্সচেঞ্জ প্রতিষ্ঠান ‘ট্রান্সফাস্টের’ কাছ থেকে সর্বোচ্চ ১২৪ টাকা দরেও রেমিট্যান্সের ডলার কিনেছে দেশের অনেক ব্যাংক। যুক্তরাজ্যভিত্তিক মানি এক্সচেঞ্জ প্রতিষ্ঠান ‘ট্যাপট্যাপ’ থেকে সংগ্রহ করা ডলারের বিনিময় হার ছিল ১২৩ টাকা ৫০ পয়সা।

করোনার পর অর্থনীতিতে বাড়তি চাহিদা, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ এবং অর্থপাচার ব্যাপক বেড়ে যাওয়ায় হুন্ডিতে ডলারের চাহিদা বেড়েছে। এতে করে ডলারের দর হু হু করে বেড়ে গত বছরের মাঝামাঝি ১১৪ টাকায় ওঠে। এরপর বাংলাদেশ ব্যাংকের মধ্যস্ততায় গত বছরের ১১ সেপ্টেম্বর থেকে ডলারের দর ঠিক করে আসছে ব্যাংকগুলো। এ প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে শুরুতে ডলারের দর রেমিট্যান্সে ১০৮ এবং রপ্তানিতে ৯৯ টাকা নির্ধারণ করা হয়। পর্যায়ক্রমে উভয় ক্ষেত্রে ডলার কেনার দর অভিন্ন করা হয়।

About Author

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

  • Click to Chat
  • Click to Chat
  • Click to Chat
  • Click to Chat