বিদেশে অবস্থানকারী কতগুলো গোষ্ঠীর লোকজন ইচ্ছাকৃতভাবে দেশের বিরুদ্ধে অপবাদ দিচ্ছে : প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বিদেশে অবস্থানকারী কতগুলো গোষ্ঠীর লোকজন ইচ্ছাকৃতভাবে দেশের বিরুদ্ধে অপবাদ দিচ্ছে। তাদের মধ্যে কিছু লোক আছে, যারা বিভিন্ন অপরাধ, অপকর্ম ও দুর্নীতি করে দেশ ছেড়েছে বা অবৈধ কাজের কারণে চাকরি হারিয়েছে, তারাই দেশের বিরুদ্ধে অপবাদ ছড়াচ্ছে।
তিনি বলেন, তারা (সরকারের) কোনও ভালো ও উন্নয়নমূলক কাজ দেখে না, বরং তারা সারা বাংলাদেশে সব সময়ে শুধু সমস্যাই খুঁজে পায়।
যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের নেতারা লন্ডনে শেখ হাসিনার অবস্থানকালীন আবাসস্থলে তার সঙ্গে দেখা করতে আসেন। এ সময় তিনি এসব কথা বলেন।
সমালোচকদের সারা দেশে সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড ঘুরে দেখার অনুরোধ জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, গ্রামীণ বাংলাদেশে কোনও অভিযোগ নেই। আমি দাবি করতে পারি যে বাংলাদেশের গ্রামীণ জনগণের জীবনযাত্রার মান উন্নীত হয়েছে এবং আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকলে, আমরা তাদের উন্নত জীবনের জন্য প্রয়োজনীয় অবশিষ্ট সব কাজ করবো।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করতে প্রবাসী বাংলাদেশিদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, আমি দেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করার জন্য আপনাদের সবার প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।
এই ঘৃণ্য অপপ্রচার মোকাবিলায় ডিজিটাল ও সামাজিক প্ল্যাটফর্মে সম্পৃক্ত হওয়ার নির্দেশনা দিয়ে দলের নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ এবং তার অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনগুলোর সদস্যরা যেন দেশের মানুষের কাছে সরকারের উন্নয়নমূলক কাজের প্রচার চালায়।
আওয়ামী লীগ সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগের কারণে বাংলাদেশে দারিদ্র্য ৪১ শতাংশ থেকে ১৮ শতাংশে নামিয়ে আনার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, চরম দারিদ্র্য মাত্র ৫ শতাংশে নেমে এসেছে এবং বেকারত্বের হার এখন মাত্র ৩ শতাংশে দাঁড়িয়েছে।
আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা বলেন, ১৯৭৫ সালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার পর জিয়াউর রহমান ও অন্যান্য সামরিক স্বৈরশাসক অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলের পর, আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা ১৯৮০ সালে লন্ডন থেকেই বাংলাদেশে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার আন্দোলন শুরু করেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০০৮ সালে নির্বাচনে জয়লাভ করে ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করার পর থেকে এখন পর্যন্ত বাংলাদেশে স্থিতিশীল গণতন্ত্র বজায় রয়েছে। গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার কারণেই আজ দেশ এই অভূতপূর্ব উন্নয়ন প্রত্যক্ষ করছে। দেশের অভ্যন্তরে আগুন-সন্ত্রাসের মতো স্থানীয় ও বৈশ্বিক উভয় সমস্যা কাটিয়ে, আমরা এখন দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বড় মেয়ে শেখ হাসিনা বলেন, আমার বাবা দেশের স্বাধীনতা এনেছেন এবং এই স্বাধীনতাকে ব্যর্থ করা যাবে না। এই স্বাধীনতার সুফল দেশের সব মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে হবে। আর এ জন্যই আমার সংগ্রাম।
প্রধানমন্ত্রী আওয়ামী লীগের অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাদের কথাও শোনেন। নেতারা বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গতিশীল নেতৃত্বে জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলা বাস্তবায়নে বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে। ছাত্রলীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগসহ আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠনের নেতারা নতুন কমিটি গঠনের মাধ্যমে সংগঠনকে শক্তিশালী করতে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রীর কাছে সর্বসম্মতভাবে দাবি জানান।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেনও অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন। লন্ডনে বাংলাদেশের হাইকমিশনার সাইদা মুনা তাসনিম অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন। এতে ইউরোপের বিভিন্ন দেশের আওয়ামী লীগ নেতারা উপস্থিত ছিলেন।