চ্যাম্পিয়নশিপ ধরে রাখতে পারলেও
চ্যাম্পিয়নশিপ ধরে রাখতে পারলেও সেনাবাহিনীর অবশ্য একটা অতৃপ্তি আছে। দ্রুততম মানব-মানবী এবারও নৌবাহিনীর। তবে গত তিন দিনে এই মিট দেখে সবারই অভিন্ন মত, সেনাবাহিনী আর নৌবাহিনীই বাঁচিয়ে রেখেছে অ্যাথলেটিকস। এই প্রতিযোগিতায় ৩৬টি ইভেন্টের ৩০টি সোনাই এই দুই দলের। বাকি ছয়টিও পেয়েছে সার্ভিসেস দল। কোনো জেলা সোনা-রুপা দূরে থাক, একটি ব্রোঞ্জ পর্যন্ত পায়নি!
এতেই বোঝা যায়, দেশের অ্যাথলেটিকসের সামগ্রিক চিত্রটা আসলে কেমন! আশাবাদী হওয়ার মতো বড় উপাদান এখানে নেই। অ্যাথলেটদের পারফরম্যান্স যদি রেকর্ড দিয়ে মাপা যায়, সেখানেও ঘুরেফিরে শূন্য বসাতে হবে। অবিশ্বাস্য হলেও সত্য, এ নিয়ে টানা তিনটি জাতীয় প্রতিযোগিতার ৩৬ ইভেন্টে একটিও জাতীয় রেকর্ড হয়নি।
তবে কয়েকটি ইভেন্টে একটু উন্নতি আছে। সেটাও এমন নয় যে, রেকর্ডের কাছাকাছি চলে গেছে। রেকর্ড গড়ার মতো অ্যাথলেট এখন আর আসলে নেই। তবে গতবারের সঙ্গে তুলনায় গেলে কাল শেষ দিনে নৌবাহিনীর মোহাম্মদ ইসমাইলের লংজাম্পের (৭.৫৫ মিটার) প্রশংসা করতে হয়। এই ইভেন্টের আগের চ্যাম্পিয়ন আল আমিন হয়েছেন দ্বিতীয়।
হাইজাম্পে নতুন মুখ সেনাবাহিনীর মাহফুজুর রহমান তাঁর সামর্থ্য অনুযায়ী ভালোই করেছেন। ২.০৫ মিটার লাফিয়ে প্রথম হওয়ার পর আগের রেকর্ড ২.১১ মিটার ভাঙার চেষ্টা করে পারেননি। রেকর্ডের মালিক সজীব হয়েছেন দ্বিতীয়।
৪০০ মিটার, ১৫০০, ৫০০০ মিটার দৌড়ে দু-তিনটি মিটের তুলনায় কিছুটা ভালো টাইমিং হয়েছে। ৫০০০ মিটারে মাদ্রাজ সাফে ১৪ মিনিটের নিচে দৌড়েছেন বাংলাদেশের অ্যাথলেট। সাম্প্রতিক বছরে এবারই ১৬-এর নিচে নেমেছে। ছেলেদের ২০০ মিটারেও গত বছরের তুলনায় একটু কমছে টাইমিং। মেয়েদের ২০০ মিটারেও তাই।
এসব অবশ্য আগামীর উজ্জ্বল স্বপ্ন আঁকে না। তাই অভিজ্ঞ অ্যাথলেটিকস কোচ কিতাব আলী উচ্ছ্বাস প্রকাশ করার কিছু দেখেন না, ‘কিছু ইভেন্টে পারফরম্যান্স গতবারের চেয়ে একটু ভালো হয়তো বলব, এটা আমাদের ক্ষীণ আশা দেখায়। তবে এসএ গেমসের জন্য তা মোটেও আশা-জাগানিয়া নয়।’
অ্যাথলেটের সংখ্যাও এবার অনেক কম। অ্যাথলেটিকস ফেডারেশন এত দিন বলে এসেছে, সব জেলাসহ অন্য সব দলের প্রায় ৬০০ অ্যাথলেট আসবে। তবে অ্যাথলেট উপস্থিতির দুরবস্থা দেখে কাল ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক ইব্রাহিম চেঙ্গিস বলতে বাধ্যই হলেন, ‘৩৫-৪০টি দলের ৪০০ থেকে ৪৫০ অ্যাথলেট এসেছে।’ অনেকের মতে, সংখ্যাটা আরও কম।
আগে খালি পায়ে হলেও জেলার অ্যাথলেটরা খেলেছেন। এবার সেটাও দেখা যায়নি। জেলার উপস্থিতি হতাশাজনক। খোদ ফেডারেশনের সহসভাপতি শাহ আলম স্বীকার করলেন, ‘এবার অন্তত ২০টি দল কম এসেছে।’ যাঁরা আছেন, তাঁদের মধ্যে পুরোনোদেরই রাজত্ব। জ্যাভলিন থ্রোতে নিজের সেরার চেয়ে ২ মিটার কম ছুড়েও যেমন সোনা পুনরুদ্ধার করেছেন নৌবাহিনীর অভিজ্ঞ অ্যাথলেট আজহারুল ইসলাম।
পদক তালিকা (শীর্ষ পাঁচ)
দল সোনা রুপা ব্রোঞ্জ
সেনাবাহিনী ১৯ ১৯ ১৩
নৌবাহিনী ১১ ১১ ৪
বিজিবি ২ ২ ২
বিজেএমসি ১ ২ ৭
বিকেএসপি ১ ১ ১