বৃহস্পতিবার থেকে সব পোশাক কারখানা খোলা থাকবে : বিজিএমইএ

0
861051_173
Array

আগামীকাল বৃহস্পতিবার থেকে সব পোশাক কারখানা খোলা থাকবে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রফতানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) সভাপতি খন্দকার রফিকুল ইসলাম।

বুধবার (৪ সেপ্টেম্বর) সকাল থেকেই সাভারের আশুলিয়ার জিরাবো, ঘোষবাগ, সরকার মার্কেট, নরসিংহপুর, নিশ্চিন্তপুর ও পল্লিবিদ্যুৎ এলাকায় শ্রমিক বিক্ষোভের কারণে পোশাক কারখানাগুলোতে সাধারণ ছুটি দেয়া হয়। এরপর বিকেলে চলমান শ্রম পরিস্থিতি নিয়ে আয়োজিত জরুরি সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান তিনি।

বিজিএমইএ সভাপতি বলেন, আজকে ১০০টির বেশি পোশাক কারখানা বন্ধ ছিল। কিছু জায়গা হামলা হয়েছে। যেসব কারখানা আজকে বন্ধ ছিল কালকে থেকে তা চালু হবে।

আইনশৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনী বিজিএমইএকে পোশাক কারখানায় নিরাপত্তা রক্ষার ব্যাপারে নিশ্চিত করেছে বিধায় আগামীকাল থেকে দেশের সব পোশাক কারখানা খোলা থাকবে বলেও জানান খন্দকার রফিকুল ইসলাম।

পোশাক কারখানায় যারা ঝামেলা করছেন তারা বহিরাগত জানিয়ে তিনি বলেন, অভ্যন্তরীণ সমস্যা খুবই কম। বহিরাগত কারা হামলা চালাচ্ছে তাদের চেনে না বিজিএমইএ। এদের খুঁজে বের করার দায়িত্ব আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর। মাসের শুরুতে কারখানায় ঝামেলা হলেও বেতন দিতে দেরি হবে না।

বিজিএমইএর জেষ্ঠ্য সহ-সভাপতি আব্দুল্লাহ হিল রাকিব বলেন, প্রতিদিন কারখানায় শ্রমিক ঢুকছে। কিন্তু বহিরাগতরা এসে ঝামেলা করছে। পুলিশ নিজেই আছে অস্থিরতার মধ্যে। আজকের ওসি জানে না কালকে কোথায় বদলি হবে। আর্মির হাতে গ্রেফতারের ক্ষমতা নেই। আবার পুলিশের হাতে গ্রেফতারের ক্ষমতা থাকলেও তারা বর্তমানে দুর্বল। সব মিলিয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর মধ্যে সমন্বয় করে আজকে রাত থেকে যৌথ অভিযান শুরু হবে। এতোদিন সমন্বয়ের অভাব থাকলেও স্বররাষ্ট্র উপদেষ্টার থেকে এসব বাহিনী বৈঠক করে জানিয়েছেন আজকে।

এর আগে বুধবার চাকরি এবং নিয়োগে নারী-পুরুষের সমান অধিকারসহ বিভিন্ন দাবিতে গাজীপুরে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন পোশাক শ্রমিকরা। এদিন দুপুরে শ্রমিক বিক্ষোভের জেরে গাজীপুর, সাভার এবং আশুলিয়ায় অন্তত ৭০টি কারখানায় ছুটি ঘোষণা করেছে কারখানা কর্তৃপক্ষ।

সকালে কারখানায় কাজে যোগ দেয়ার পর সেখান থেকে বেরিয়ে এসে বিক্ষোভ ও ইটপাটকেল ছোড়ার পর উত্তেজনাকর পরিস্থিতি তৈরি হয়। পরে সেখানকার অনেক কারখানায় ছুটি ঘোষণা করা হয় বলে নিশ্চিত করেছে শিল্পাঞ্চল পুলিশ।

আশুলিয়ায় শিল্পাঞ্চল পুলিশ-১-এর পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সারোয়ার আলম বলেন,‘দীর্ঘদিন রাজনৈতিক সরকারের আমলে শ্রমিকরা নাইট বিল, ওভার টাইম, টিফিন মিল, হাজিরা বোনাসসহ বিভিন্ন দাবি দাওয়া নিয়ে তাদের দাবি জানাতে পারেনি। মূলত প্রভাবশালী মালিকপক্ষের কারণেই এটা পারেনি।’

বুধবার সকালের পর বিক্ষোভরত শ্রমিকেরা একপর্যায়ে নবীনগর থেকে চন্দ্রা মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করে।

এতে রাস্তার দুই পাশে যানজটের সৃষ্টি হয়। বেলা ২টার দিকে ঘটনাস্থলে সেনাবাহিনীর সদস্য ও ঢাকা জেলা পুলিশ উপস্থিত হয়ে শ্রমিকদের সড়ক ছেড়ে দেয়ার অনুরোধ করেন। দুপুরে পর পরিস্থিতি কিছুটা শান্ত হয় বলে জানিয়েছে শিল্পাঞ্চল পুলিশ।

শিল্পাঞ্চল পুলিশ সুপার সারোয়ার আলম বলেন, নতুন সরকার দায়িত্ব নেয়ার পর থেকে শ্রমিকরা এখন তাদের দাবি দাওয়ার কথা তুলছে। এ নিয়ে গত দুই দিনে এই এলাকার কারখানাগুলোতে এক ধরনের অসন্তোষ দেখা দিচ্ছে। যে কারণে কর্তৃপক্ষ পরিস্থিতি সামাল দিতে ওই কারখানা কর্তৃপক্ষ ছুটি ঘোষণা করতে বাধ্য হয়।

এমন পরিস্থিতিতে দুপুরে সচিবালয়ে এই নিয়ে বৈঠক করে অন্তর্বতীকালীন সরকারের কয়েকজন উপদেষ্টা।

পরে স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা এ এফ হাসান আরিফ সাংবাদিকদের জানান, পোশাক কারখানায় যারা ভাঙচুর করছে তারা শ্রমিক না, বহিরাগত। শ্রমিক বাঁচাতে, অর্থনীতি বাঁচাতে শক্ত পদক্ষেপ নেবে সরকার।

পুলিশ বলছে, এই অঞ্চলে ১ হাজার ৮০০’র মতো কারখানা রয়েছে তার মধ্যে ছুটি দেয়া হয়েছে ৭০টি।

About Author

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

  • Click to Chat
  • Click to Chat
  • Click to Chat
  • Click to Chat