তিস্তা প্রকল্প : চীনের প্রস্তাবে ভারতের আপত্তি থাকলে ভূরাজনৈতিক বিবেচনায় পদক্ষেপ

0
802079_179
Array

তিস্তা নদীর বাংলাদেশ অংশের উন্নয়নে চীনের প্রস্তাবনা নিয়ে প্রতিবেশী দেশ ভারতের পক্ষ থেকে কোনো ধরনের আপত্তি তোলা হলে ভূ-রাজনৈতিক গুরুত্ব বিবেচনায় পদক্ষেপ নেয়া হবে বলে জানিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

বৃহস্পতিবার (২৮ ডিসেম্বর) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাপ্তাহিক নিয়মিত ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র সেহেলী সাবরীন।

চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন ২১ ডিসেম্বর বলেছেন, ‘এরই মধ্যে বাংলাদেশ থেকে তিস্তা নদীবিষয়ক কয়েকটি উন্নয়ন প্রকল্পের প্রস্তাব আমরা পেয়েছি। আসন্ন নির্বাচন শেষ হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করছি। তিস্তা নদীর উন্নয়নে চীন কাজ করতে আগ্রহী। আশা করছি যে আগামী ৭ জানুয়ারির নির্বাচনের পর তিস্তা প্রকল্পের কাজ শুরু করতে পারব।’

ওইদিন রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে ‘বাংলাদেশে চীনের ভাবমূর্তি’ শীর্ষক এক সেমিনারে তিস্তা প্রকল্প নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নে কথা বলেন ঢাকায় নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত।

তার এ বক্তব্য বিষয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে সেহেলী সাবরীন বলেন, ‘আপনারা জানেন, চীন বাংলাদেশের অন্যতম উন্নয়ন সহযোগী রাষ্ট্র। বাংলাদেশের অভ্যন্তরে বিভিন্ন অবকাঠামোগত উন্নয়নে তারা সহযোগিতা করে আসছে। তিস্তা নদীর বাংলাদেশ অংশের উন্নয়নমূলক প্রকল্পে সহযোগিতা করার ব্যাপারেও চীন আগ্রহ প্রকাশ করেছে। এ বিষয়টি আমাদের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি) যারা সাধারণত বিভিন্ন প্রকল্প নিয়ে কাজ করে, তারা বিবেচনা করে দেখবে।’

চীন তিস্তার যে অংশে প্রকল্পের কাজ শুরু করতে চায় সেখান থেকে ভারতের শিলিগুড়ি করিডোর খুব দূরে নয়। শিলিগুড়ি করিডোরকে ভারত ‘চিকেন্স নেক’ নামেও অভিহিত করে। দেশটি মনে করে তিস্তা নদীর উন্নয়নকাজের নামে চীন চিকেন্স নেককে নিজেদের কব্জায় নিতে চায়। এ কারণে ভারত চিকেনস নেকের সামনে চীনের উপস্থিতি দেখতে চায় না।

এক্ষেত্রে তিস্তায় চীনের কাজ নিয়ে ভারত আপত্তি তুললে তা কতটুকু আমলে নেবে বাংলাদেশ- এমন প্রশ্নে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র বলেন, ‘আসলে পুরো প্রশ্নটি অনুমাননির্ভর। এমন অনুমাননির্ভর প্রশ্নের জবাব দেয়াও সহজ নয়। তবে এরকম কোনো প্রস্তাব বা আপত্তি ভারতের পক্ষ থেকে এলে, তখন ভূ-রাজনৈতিক গুরুত্বের বিষয়টি আমরা বিবেচনা করবো। সে অনুযায়ী পরবর্তী পদক্ষেপ নেবো।’

প্রস্তাবিত তিস্তা উন্নয়ন মহাপরিকল্পনা অনুযায়ী, বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তের ভাটি থেকে তিস্তা-যমুনার মিলনস্থল পর্যন্ত নদীর প্রস্থ কমিয়ে ৭০০ থেকে ১০০০ মিটারে সীমাবদ্ধ করা হবে। যেখানে নদীর গভীরতা বাড়নো হবে ১০ মিটার। এছাড়া নদীশাসনের মাধ্যমে তিস্তার সঠিক ব্যবস্থাপনা, ড্রেজিংয়ের মাধ্যমে পানি ধারণক্ষমতা বৃদ্ধি, নদীর উভয় পাড়ে বাঁধ মেরামত ও প্রায় ১০০ কিলোমিটারের বেশি নতুন বাঁধ নির্মাণের বিষয়গুলো রয়েছে। এ প্রকল্পে অর্থায়ন করবে চীন।

‘তিস্তা রিভার কমপ্রিহেনসিভ ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড রেস্টোরেশন’ নামের এ প্রকল্প বাস্তবায়নে ২০১৬ সালে বাংলাদেশ ও চীনের মধ্যে চুক্তি হলেও পরবর্তীকালে তা অগ্রগতির মুখ দেখেনি।

About Author

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

  • Click to Chat
  • Click to Chat
  • Click to Chat
  • Click to Chat