রাজনৈতিক কর্মসূচি বন্ধের সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবি চরমোনাই পীরের
রাজনৈতিক কর্মসূচি বন্ধের সিদ্ধান্ত বাতিল করার দাবিতে জানিয়েছেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমীর চরমোনাই পীর মুফতী সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম। পাশাপাশি আগামী ১৬ ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে দেশব্যাপী পতাকা র্যালি কর্মসূচি ঘোষণা করেন তিনি। বৃহস্পতিবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এসব কথা বলেন চরমোনাই পীর।
রাজনৈতিক কর্মসূচি বন্ধের সিদ্ধান্তে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে মুহাম্মদ রেজাউল করীম বলেন, ১৮ ডিসেম্বর থেকে জাতীয় নির্বাচনের ভোট গ্রহণের আগ পর্যন্ত কোনো রাজনৈতিক কর্মসূচি আয়োজনের অনুমতি না দিতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে অনুরোধ করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। গণতান্ত্রিক দেশে এধরণের সিদ্ধান্ত মেনে নেয়া যায় না। মানুষের প্রতিবাদের ভাষা কেড়ে নেয়ার এই চক্রান্ত প্রত্যাহার করতে হবে। মতপ্রকাশের অধিকারকে রুদ্ধ করার এই অশুভ উদ্যোগ বাংলাদেশের চলমান রাজনৈতিক, অর্থনীতিক ও কূটনীতিক সংকটকে আরও ঘনীভূত করবে। আমি সেই সিদ্ধান্তের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।
তিনি বলেন, বিরোধী দলবিহীন প্রহসনের ৭ জানুয়ারির নির্বাচনের নামে ভাগ-ভাটোয়ারার মাধ্যমে ডামি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ১৮ ডিসেম্বর থেকে জাতীয় নির্বাচনের ভোট গ্রহণের আগ পর্যন্ত কোনো রাজনৈতিক কর্মসূচি আয়োজনের অনুমতি না দেয়ার দলবাজ ইসির আবেদন আমলে নিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর নিষেধাজ্ঞা দেশে সঙ্কটকে আরো প্রকট করে তুলবে। পাতানোর নির্বাচনকে বৈধতা দিতেই অথর্ব ও অযোগ্য নির্বাচন কমিশন জনবিদ্বেষী সিদ্ধান্তটি নিয়েছে। এর ফলে নির্বাচন কমিশনের দলান্ধতা প্রকাশ পেয়েছে।
চরমোনাই পীর বলেন, জনগণের মুক্তি ও স্বাধীনতার আকাঙ্ক্ষাকে দমিয়ে রাখতে দুঃশাসন, দুর্নীতি ও নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের অসহনীয় মূল্যবৃদ্ধিতে মানুষের ভয়াবহ দুর্গতির মধ্যে নীলনকশার এই অন্যায় পদক্ষেপকে গণমানুষ ঘৃণাভরে ধিক্কার জানাচ্ছে। ইতিপূর্বে নামসর্বস্ব রাজনৈতিক দলকে নিবন্ধন এবং ভুয়া প্রতিষ্ঠানকে নির্বাচনী পর্যবেক্ষক হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে ফ্যাসিস্ট সরকারের নির্দেশনা প্রতিপালন করেছে মেরুদণ্ডহীন নির্বাচন কমিশন।
তিনি আরো বলেন, বর্তমান নির্বাচন কমিশনও ২০১৪ সালের ভোটারবিহীন প্রহসন বা ২০১৮ সালের নিশিরাতের ভোটপ্রদানের মত আরো একটি প্রহসনের নির্বাচনের আয়োজন করছে।
জনগণ পরিকল্পিত ভাগ-ভাটোয়ারার নির্বাচনকে বর্জন করেছে। ১২ কোটি ভোটারের ভোটের অধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠা করে নির্বাচনকালীন জাতীয় সরকারের অধীনে অনুষ্ঠিত একটি সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনই দেশের চলমান সঙ্কট থেকে জাতিকে মুক্তি দিতে পারে। এজন্য আমরা তিনটি প্রস্তাবনা দিয়েছি। এই প্রস্তাবনা মেনে নিয়ে দ্রুত পক্ষমতা থেকে পদত্যাগ করুন।
১. বিতর্কিত নির্বাচন কমিশন কর্তৃক ঘোষিত একতরফা তফসিল বাতিল করে গ্রেপ্তারকৃত বিরোধী দলীয় রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের মুক্তি দিয়ে নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ তৈরী করতে হবে।
২. বর্তমান বিতর্কিত পার্লামেন্ট ভেঙ্গে দিয়ে জাতীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে হবে।
৩. কার্যকরী সংসদ, রাজনৈতিক সংহতি এবং শতভাগ জনমতের প্রতিফলনের জন্য পিআর বা সংখ্যানুপাতিক পদ্ধতির নির্বাচন’ই অধিকতর উত্তম পদ্ধতি, যা বিশ্বে স্বীকৃতি লাভ করেছে তা প্রবর্তন করতে হবে।