দেশের পরিস্থিতি কি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে ?
গতকালের ঘটনা এবং আজকের হরতালের পর জনমনে আতঙ্ক আরও বেড়েছে। নাগরিক জীবনে নানা প্রশ্নের উদয় হয়েছে। বিভিন্ন আলোচনায়, আড্ডায় মানুষ আতঙ্ক প্রকাশ করছেন অবলীলায়। তারা বলছেন, দেশের পরিস্থিতি কি খারাপের দিকে চলে যাবে? এ নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে চলছে নানামুখী আলোচনা।
বিএনপি ২৮ অক্টোবরের পর থেকে কঠোর অবস্থানে চলে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। তারা নতুন কর্মসূচি দেবে বলেও জানিয়েছে। যদিও বিএনপির শীর্ষ নেতারা এখন আত্মগোপনে রয়েছেন। দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ইতোমধ্যেই গ্রেপ্তার হয়েছেন। তবে গ্রেপ্তার এবং পলাতক থাকলেও কর্মসূচি থেমে থাকবে না বলে তারা মনে করছেন।
দীর্ঘদিন পর আজ হরতালের যুগে ফিরে গেছে বাংলাদেশ। যদিও এই হরতালে কোন পিকেটিং ছিল না কিন্তু জনজীবনে আতঙ্কের কারণে সাধারণ মানুষজন ঘর থেকে বের হয়নি। রাস্তাঘাটে যান চলাচলও অনেক কম ছিল। এরকম একটি অবস্থায় প্রশ্ন দাঁড়িয়েছে যে কোন পথে যাচ্ছে দেশ। দেশের পরিস্থিতি কি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে?
সরকারের গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রীরা বলেছেন, দেশের পরিস্থিতি কোনো ভাবেই নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে না। পরিস্থিতি পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আছে। জনগণের জানমালের হেফাজতের জন্য সরকার বদ্ধ পরিকর। কোনো অবস্থাতেই জনগণের জানমাল নিয়ে কাউকে ছিনিমিনি খেলতে দেওয়া যাবে না। তবে বিভিন্ন সূত্রগুলো বলছে, বিএনপি এখন অস্থিত্বের লড়াই করছে। আর এই অস্থিত্বের লড়াই করতে গিয়ে বিএনপি যে কোনো প্রকারে সরকারকে চাপে ফেলতে চায়। আর এই জন্য তারা এখন সারা দেশেই পাল্টা আঘাত করবে।
বিএনপির বিভিন্ন সূত্রগুলো বলছে, বিএনপি নেতাদের গ্রেপ্তার, হয়রানি ইত্যাদি বাড়তে থাকলে তারা লাগাতার কর্মসূচিতে যাবে এবং এ সমস্ত কর্মসূচিতে বাধা পেলে পাল্টা আঘাত করা হবে। অর্থাৎ সামনের কিছু দিন যে চ্যালেঞ্জিং হবে এটা বলাই বাহুল্য। এখন দেখার বিষয় যে, সরকার কতটা সোচ্চার থাকে এবং কিভাবে পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে পারে। সরকার অবশ্য নির্বাচন, আন্দোলন এবং জনগণের যানমালের হেফাজত-তিনটি বিষয়কে আলাদা আলাদাভাবে দেখছেন।
আওয়ামী লীগের একজন প্রেসিডিয়াম সদস্য বলেছেন, বিএনপি নির্বাচন করবে কি করবে না এটা তাদের একান্ত দলীয় সিদ্ধান্ত। কিন্তু এই নির্বাচন বানচালের জন্য তারা যদি কোন চেষ্টা করে সেটাকে প্রতিহত করবে। তবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কঠোর অবস্থান, আওয়ামী লীগের সতর্ক প্রহরা আর বিএনপির কিছু একটা করে দেখানোর মানসিকতা এই ত্রিমূখী দ্বন্দ্বে শেষ পর্যন্ত দেশের পরিস্থিতি কোন দিকে যাবে তা নিয়ে অনেক আতঙ্ক। তবে বড় ধরনের পরিস্থিতির কোনো অবনতি না ঘটলেও আগামী কিছুদিন যে দেশের পরিস্থিতি একটু উত্তপ্ত থাকবে, সহিংসতা বাড়বে এটা বলাই বাহুল্য। তবে অনেকেই মনে করে যে শেষ পর্যন্ত সরকার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে না।