‘কানাডা এখন খুনিদের আখড়ায় পরিণত হয়েছে ‘: ভারতের সমর্থনে বললেন বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী
পাল্টে যাচ্ছে কূটনৈতিক দৃশ্যপট। খালিস্তানি সন্ত্রাসী হরদীপ সিং নিজ্জার হত্যার কারণে ভারত ও কানাডার মধ্যে উত্তেজনা বৃদ্ধির পর, বাংলাদেশ এখন কানাডার প্রত্যর্পণ নীতির বিরুদ্ধে নিজস্ব অভিযোগ তুলেছে। বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা শেখ মুজিবুর রহমানের খুনি নূর চৌধুরীকে হস্তান্তর করতে কানাডার অস্বীকৃতি এখন এই বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দুতে।
ইন্ডিয়া টুডে- এর সঙ্গে একান্ত সাক্ষাৎকারে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন একটি সাহসী মন্তব্য করেছেন । তিনি বলেছেন : “কানাডা সব খুনিদের আবাসস্থল হতে পারে না। একদিকে খুনিরা কানাডায় গিয়ে নিরাপদে রয়েছে , অন্যদিকে নিহতের পরিবারের আত্মীয়রা কষ্টে দিন যাপন করছে ।’
এই তীক্ষ্ণ সমালোচনা নির্দেশ করে- প্রত্যর্পণ নিয়ে কানাডার অবস্থান, বিশেষ করে মৃত্যুদণ্ডের বিরুদ্ধে এর অবস্থান অপরাধীদের ‘প্রতিরক্ষামূলক ঢাল’ হয়ে উঠছে।
মোমেন মৃত্যুদণ্ডের বিষয়টি আরও বিশদভাবে বর্ণনা করে বলেন, “আমাদের বিচার বিভাগ খুবই স্বাধীন এবং সরকার এতে হস্তক্ষেপ করতে পারে না। তবে, নূর চৌধুরী যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আসামি । নূর চৌধুরী এবং রশিদ চৌধুরী উভয়েই যদি বাংলাদেশে ফিরে আসেন এবং দেশের প্রেসিডেন্টের কাছে প্রাণভিক্ষার আবেদন করেন তাহলে প্রেসিডেন্ট তাদের প্রাণভিক্ষার আবেদন মঞ্জুর করে তাদের সাজা মৃত্যুদণ্ড থেকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে পরিবর্তন করতে পারেন।”
পররাষ্ট্রমন্ত্রীর কথাগুলো মানবাধিকারের অপব্যবহার সম্পর্কিত বৈশ্বিক উদ্বেগকে স্পর্শ করে । তিনি জোর দিয়ে বলেন, “অনেক সময় অনেক লোকের দ্বারা মানবাধিকারের ধারণার অপব্যবহার করা হচ্ছে। এটি সত্যিই দুর্ভাগ্যজনক কারণ এটি অনেক সময় খুনি এবং সন্ত্রাসীদের রক্ষা করার জন্য কিছু লোকের কাছে একটি অজুহাত হয়ে উঠেছে। ”
কানাডা , বাংলাদেশ ও ভারতের মতো দেশগুলির কাছে প্রত্যর্পণের রাজনীতি একটি বৃহত্তর ব্যাখ্যা রয়েছে ।
আন্তর্জাতিক আইন, মানবাধিকার এবং জাতীয় নিরাপত্তার ভারসাম্য রক্ষার ক্ষেত্রে দেশগুলো যে চ্যালেঞ্জগুলোর মুখোমুখি হয় সেগুলোর ওপর জোর দেয় তারা । যদিও কানাডা মানবাধিকারের প্রতি তার অবস্থানে অনড় , তবে এটিকে তার অংশীদাররা ক্রমবর্ধমানভাবে অপরাধী এবং সন্ত্রাসীদের নিরাপত্তার ঢাল হিসেবে দেখছে ।
বাংলাদেশের সাহসী দাবির সাথে, স্পটলাইট এখন কানাডার প্রত্যর্পণ নীতির উপর । ঘটনাগুলি কেবল দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ওপরেই প্রভাব ফেলবে না বরং বিশ্বে দেশগুলো কীভাবে প্রত্যর্পণের জটিল সমস্যাটি মোকাবেলা করে তার একটি নজিরও স্থাপন করবে।