রিজার্ভ আবারো কমছে.আকুর দায় পরিশোধ করতে হবে ১.২ বিলিয়ন ডলার : কমছে রেমিট্যান্স প্রবাহ

774028_151
Array

প্রতি মাসেই কমে যাচ্ছে দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ। জুলাই-আগস্ট মাসের এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নের (আকু) ব্যয় পরিশোধ করতে হবে ১.২ বিলিয়ন ডলার। আগামী সপ্তাহেই এ অর্থ পরিশোধ করতে হবে। আর এর মাধ্যমে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ আরেক দফা কমে ২২ বিলিয়ন ডলারের নিচে নেমে যাচ্ছে।

ব্যাংকাররা জানিয়েছেন, ডলারের আন্তঃপ্রবাহের চেয়ে বহিঃপ্রবাহ বেশি হচ্ছে। আবার রেকর্ড পরিমাণ বাংলাদেশী শ্রমিক বিদেশে গেলেও কাঙ্ক্ষিত হারে রেমিট্যান্স আসছে না। বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ পরিসংখ্যান থেকে দেখা যায়, গত জুলাই মাসে রেমিট্যান্স প্রবাহ কমে গিয়েছিল আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় প্রায় ৬ শতাংশ। আগস্ট মাসেও আগের মাসের রেমিট্যান্স প্রবাহ কমে যাওয়ার ধারাবাহিকতা অব্যাহত রয়েছে। গত ৩০ আগস্ট পর্যন্ত দেশে রেমিট্যান্স এসেছে ১৫২ কোটি ডলার, যেখানে আগের মাসে অর্থাৎ জুলাইতে ছিল ১৯৭ কোটি ডলার। কিন্তু ইমপোর্ট পেমেন্ট কমছে না। বিশেষ করে আগের বকেয়া এলসি ও চলতি এলসির দায় মেটাতে হচ্ছে আন্তপ্রবাহের চেয়ে বেশি হারে। এর ফলে প্রতি মাসেই কমে যাচ্ছে বৈদেশিক মুদ্রার মজুদ।

বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিসংখ্যান থেকে দেখা যায়, গতকাল বৈদেশিক মুদ্রার মজুদ ছিল ২ হাজার ৩০৬ কোটি ডলার। যেখানে গত ৩১ জুলাইতে ছিল ২ হাজার ৩৩৫ কোটি ডলার। এটা রিজার্ভের প্রকৃত হিসাব। আর এক বছরের আগের হিসাবে গত বছরের ৩০ আগস্টে বৈদেশিক মুদ্রার মোট মজুদ ছিল ৩ হাজার ৯০৪ কোটি ডলার। এ হিসাবে এক বছরে রিজার্ভ কমেছে ১ হাজার ৬০০ কোটি ডলার। তবে বৈদেশিক মুদ্রার মজুদের বর্তমান হিসাব আরো কমে যাবে সামনের সপ্তাহে।

জানা গেছে, প্রতি দুই মাস পর পর এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নের দায় পরিশোধ করতে হয়। গত জুলাই ও আগস্ট মাসের এ আকুর দায় পরিশোধ করতে হবে আগামী মাসের প্রথম সপ্তাহে। বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, গত দুই মাসের আকুর দায় পরিশোধ করতে হবে ১ দশমিক ২ বিলিয়ন বা ১০২ কোটি ডলার। গতকাল প্রকৃত রিজার্ভ ছিল ২ হাজার ৩০৬ কোটি ডলার। এ হিসাবে আগামী সপ্তাহে বৈদেশিক মুদ্রার মজুদ ২২ বিলিয়েনেরও নিচে নেমে যাবে বলে মনে করা হচ্ছে। অথচ আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল আইএমএফের কাছ থেকে ঋণ পাওয়ার শর্ত অনুযায়ী বৈদেশিক মুদ্রার প্রকৃত মজুদ ২৪ বিলিয়ন ডলারের ওপরে রাখতে হবে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, ব্যাংকগুলো যে পরিমাণ ডলার আহরণ করছে অনেক ব্যাংকই এলসি খুলেছে তার চেয়েও বেশি। এর ফলে প্রতি মাসেই তারা আমদানির দায় পরিশোধ করতে গিয়ে ঘাটতির মুখে পড়ছে। কিন্তু বাজার থেকে ডলার কিনতে না পারায় বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে হাত পাতছে। তবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে শুধু সরকারের অতি প্রয়োজনীয় কেনাকাটায় বিশেষ করে বিপিসির জ্বালানি তেল, বিসিআইসির সার, বিএডিসির ভোগ্য পণ্যসহ অতি প্রয়োজনীয় কেনাকাটায় দেখেশুনে ব্যাংকগুলোকে কিছু ডলার সরবরাহ করছে। এর পরেও বিদায়ী অর্থবছরে প্রায় ১৪ বিলিয়ন ডলার বিক্রি করতে হয়েছে বৈদেশিক মুদ্রার মজুদ থেকে, যা এ যাবত কালের সর্বোচ্চ। অথচ আগের অর্থবছরে রিজার্ভ থেকে বিক্রি করতে হয়েছিল প্রায় সাড়ে সাত বিলিয়ন ডলার। যে হারে প্রতি মাসে রিজার্ভ কমে যাচ্ছে তা অব্যাহত থাকলে সামনে বৈদেশিক মুদ্রার মজুদ আরো চাপে পড়ে যাবে। তখন আপৎকালীন দায় মেটাতে কষ্টকর হবে। এ পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের জন্য বিশ্বে নতুন নতুন শ্রমবাজার সৃষ্টির বিকল্প নেই।

About Author

  • Click to Chat
  • Click to Chat
  • Click to Chat
  • Click to Chat