বিদেশি পর্যবেক্ষক নীতিমালা সংশোধনে অংশীজনদের মতামত চায় টিআইবি

0
tib-20230820191322
Array

আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে বিদেশি বা আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষক নীতিমালা সংশোধনের যে উদ্যোগ নির্বাচন কমিশন (ইসি) নিয়েছে, তাতে সংশ্লিষ্ট বিষয়ে বিশেষজ্ঞ, গণমাধ্যমকর্মী এবং অংশীজনদের মতামত নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। একই সঙ্গে আন্তর্জাতিক চর্চার আলোকে নীতিমালাটি সংশোধনের পক্ষে মত দিয়েছে সংস্থাটি।

রোববার (২০ আগস্ট) এক বিবৃতিতে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান এ আহ্বান জানান।
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে ২০১৮ সালে বিদেশি পর্যবেক্ষকদের নির্বাচন পর্যবেক্ষণের জন্য একটি নীতিমালা করে ইসি। দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে সেই নীতিমালায় কিছু সংশোধনী আনতে চাইছে কমিশন। এ নিয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে ইসির বৈঠকও হয়েছে। সেই বৈঠকের পরই নীতিমালা সংশোধনের চূড়ান্ত উদ্যোগ নেয় কমিশন।

পাঁচ বছর আগে করা বিদ্যমান নীতিমালায় বলা আছে, আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকদের কঠোরভাবে রাজনৈতিক নিরপেক্ষতা বজায় রাখতে হবে, নির্বাচন পর্যবেক্ষণের সময় যথাযথ পরিচয় দিতে হবে, ভোটকেন্দ্রে গিয়ে প্রথমে প্রিসাইডিং কর্মকর্তার সঙ্গে দেখা করতে হবে এবং প্রিসাইডিং কর্মকর্তার আইনানুগ নির্দেশনা মানতে হবে। এছাড়া পর্যবেক্ষকদের পেশাদারত্ব বজায় রাখতে হবে, পর্যবেক্ষক দল আনুষ্ঠানিকভাবে বক্তব্য দেওয়ার আগে পর্যবেক্ষকদের কেউ ব্যক্তিগতভাবে গণমাধ্যমে মন্তব্য করতে পারবেন না। পর্যবেক্ষকেরা ভোটকেন্দ্র থেকে ফেসবুক, টুইটার বা এ ধরনের কোনো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সরাসরি কিছু সম্প্রচার করতে পারবেন না।

ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ২০১৮ সালে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভিসা জটিলতার কারণে বিদেশি পর্যবেক্ষকদের স্বল্প সংখ্যক উপস্থিতি ও বিতর্কিত ভূমিকা নির্বাচন প্রক্রিয়াকে কলুষিত করেছিল। বিদ্যমান নীতিমালাটি অবশ্যই সংশোধন করতে হবে। কারণ, একটি সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠানে দেশি-বিদেশি পর্যবেক্ষকদের অবাধ উপস্থিতি ও স্বাধীনভাবে বিচরণের সুযোগ অপরিহার্য।

তিনি বলেন, এক্ষেত্রে শুধু সরকারি প্রতিষ্ঠানের মতামতনির্ভর সিদ্ধান্তের মাধ্যমে বিধি-নিষেধমূলক নীতিমালা প্রণীত হলে, একদিকে যেমন নির্বাচন কমিশনের চলমান আস্থার সংকট আরও গভীরতর হবে, অন্যদিকে তা বিদেশি পর্যবেক্ষকদের আবারও নিরুৎসাহিত করবে।

আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষক নীতিমালাটি ‘যুগোপযোগী’ করার ক্ষেত্রে বিদেশি পর্যবেক্ষকদের অবাধ উপস্থিতিকে লেভেল-প্লেইং ফিল্ড বা সমান প্রতিযোগিতার ক্ষেত্র নিশ্চিতের গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম হিসেবে বিবেচনার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।

এ প্রসঙ্গে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক বলেন, নির্বাচন সুষ্ঠু করার দায় এককভাবে যেমন নির্বাচন কমিশনের নয়, তেমনই একটি স্বচ্ছ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আয়োজন করাও যে কমিশনের সাংবিধানিক দায়িত্ব ও বাধ্যবাধকতা, তা-ও ভুলে গেলে চলবে না। তাই সংশ্লিষ্ট বিষয়ে দল-নিরপেক্ষ বিশেষজ্ঞ, গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব ও অন্য অংশীজনদের মতামত নেওয়া জরুরি। এক্ষেত্রে বিগত দিনে বাংলাদেশের ইতিবাচক ও নেতিবাচক অভিজ্ঞতাসহ আন্তর্জাতিক চর্চার আলোকে নীতিমালাটি ঢেলে সাজাতে হবে।

২০১৮ সালে তৎকালীন নির্বাচন কমিশন সচিব ‘পর্যবেক্ষকদের ভোটকেন্দ্রে মূর্তির মত থাকতে হবে’ বলে যে মন্তব্য করেছিলেন, বিদ্যমান নীতিমালা সংশোধনের ক্ষেত্রে সেই একই মানসিকতার প্রতিফলন যেন না ঘটে, সেদিকটি বর্তমান কমিশন ও সংশ্লিষ্ট সরকারি কর্তৃপক্ষকে সক্রিয়ভাবে বিবেচনা করার আহ্বান জানিয়েছে টিআইবি।

আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষক নীতিমালায় সংশোধন আনার উদ্যোগ নিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে একটি বৈঠকের পর এই উদ্যোগ নিয়েছে সাংবিধানিকভাবে স্বাধীন এই সংস্থা।

আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকদের নির্বাচন পর্যবেক্ষণের জন্য ২০১৮ সালে একটি নীতিমালা করা হয়। ইসির সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, ওই নীতিমালাকেই ‘যুগোপযোগী’ করা হবে। এ জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় এবং জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সঙ্গে একটি যৌথ বৈঠক করবে ইসি সচিবালয়। ২৩ আগস্ট ওই বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে। সেখানে বর্তমান নীতিমালাটি পর্যালোচনা করা হবে।

ইসি সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষক নীতিমালাকে ‘যুগোপযোগী’ করা হবে। এ লক্ষ্যে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় এবং জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সঙ্গে যৌথ বৈঠক করবে ইসি। আগামী ২৩ আগস্ট এ বৈঠক হতে পারে। সেখানেই বর্তমান নীতিমালাটি পর্যালোচনায় আসবে।

About Author

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

  • Click to Chat
  • Click to Chat
  • Click to Chat
  • Click to Chat