ডলারের দামে রেকর্ড, খোলাবাজারে ১১৫ টাকা

0
dollar
Array

সোমবার ব্যাংকগুলোর কাছে সবশেষ ৯৪ টাকা ৯৫ পয়সা দরে ডলার বিক্রি করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। রোববার ডলারের দাম ছিল ৯৪ টাকা ৭০ পয়সা।একদিনের ব্যবধানে টাকার মান কমেছে ২৫ পয়সা।

অন্যদিকে খোলাবাজারেও ডলারের দাম বেড়েই চলেছে। সোমবার (০৮ আগস্ট) খোলাবাজারে ডলার বিক্রি হচ্ছে ১১৫ টাকায়, যা দেশের ইতিহাসে ডলারের রেকর্ড দাম। রোববার খোলাবাজারে ডলারের দাম ছিল ১১১ টাকা। এর আগে, গত ২৬ জুলাই ডলারের দাম বেড়ে ১১২ টাকা হয়।

এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র সিরাজুল ইসলাম জানিয়েছেন, সোমবার ৯৪.৯৫ টাকা দরে ব্যাংকগুলোর কাছে ডলার বিক্রি করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এখন থেকে আন্তঃব্যাংক মুদ্রাবাজারে প্রতি ডলার কিনতে খরচ করতে হবে ৯৪.৯৫ টাকা। নিয়ম অনুযায়ী এটাই ডলারের আনুষ্ঠানিক দর।

রাজধানীর পুরান ঢাকার শাঁখারিবাজারের সেঞ্চুরি মানি এক্সচেঞ্জের ম্যানেজার জানিয়েছেন, আজ তারা সর্বশেষ প্রতি ডলার ১১৪/১১৫ টাকা দরে বিক্রি করেছেন, যা গতকাল রোববারও ১১২/১১৩ টাকায় বিক্রি হয়েছে।

জানা গেছে, তিন মাসের মধ্যে ১৯ দফা বাড়ানো হয়েছে ডলারের দাম। আলোচ্য সময়ে টাকার মান কমেছে ৮ টাকা ৫০ পয়সা। এর আগে গত ২৯ মে দেশে ডলারের এক রেট ৮৯ টাকা বেঁধে দিয়েছিল কেন্দ্রীয় ব্যাংক। কিন্তু, পরবর্তীতে এই রেট উঠিয়ে দিয়ে ডলারের দর বাজারের ওপর ছেড়ে দেওয়া হয়। বাজারের ওপর ছেড়ে দেওয়ার পরই দু-এক দিন পরপরই বাড়ছে ডলারের দাম।

ডলারের দাম পর্যালোচনায় দেখা গেছে, ২০২০ সালের জুলাই থেকে গত বছরের আগস্ট পর্যন্ত আন্তঃব্যাংক মুদ্রাবাজারে ডলারের দাম ৮৪ টাকা ৮০ পয়সায় স্থিতিশীল ছিল। কিন্তু, এর পর থেকেই বড় ধরনের আমদানি ব্যয় পরিশোধ করতে গিয়ে ডলার সংকট শুরু হয়, যা এখনও অব্যাহত আছে। ২০২১ সালের আগস্টের শুরুতেও আন্তঃব্যাংকে প্রতি ডলারের দাম একই ছিল। ৩ আগস্ট থেকে দু-এক পয়সা করে বাড়তে বাড়তে গত বছরের ২২ আগস্ট প্রথমবারের মতো ডলারের দাম ৮৫ টাকা ছাড়ায়।

এদিকে, চলতি বছরের ৬ জানুয়ারি পর্যন্ত আন্তঃব্যাংক মুদ্রাবাজারে প্রতি ডলার কেনাবেচা হয়েছিল ৮৫ টাকা ৮০ পয়সায়। ৯ জানুয়ারিতে তা বেড়ে দাঁড়ায় ৮৬ টাকা। গত ২৩ মার্চ তা বেড়ে ৮৬ টাকা ২০ পয়সা হয়। গত ২৭ এপ্রিল ডলার প্রতি ২৫ পয়সা বেড়ে ৮৬ টাকা ৪৫ পয়সায় বেচাকেনা হয়েছে।

গত ১০ মে ডলার প্রতি আরও ২৫ পয়সা বেড়ে ৮৬ টাকা ৭০ পয়সায় বেচাকেনা হয়েছে। গত ১৬ মে আন্তঃব্যাংক মুদ্রাবাজারে প্রতি ডলারের দাম ৮৭ টাকা ৫০ পয়সা নির্ধারণ করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ২৩ মে ফের ৪০ পয়সা বাড়িয়ে ডলারের দাম ৮৭ টাকা ৯০ পয়সা নির্ধারণ করা হয়। এরপরও বাজার স্থিতিশীল হয়নি। পরে সংকট নিরসনে বাংলাদেশ ফরেন এক্সচেঞ্জ ডিলারস অ্যাসোসিয়েশন (বাফেদা) এবং ব্যাংকের শীর্ষ কর্মকর্তাদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স, বাংলাদেশের (এবিবি) দাবির পরিপ্রেক্ষিতে গত ২৯ মে বাংলাদেশ ব্যাংক আন্তঃব্যাংক মুদ্রাবাজারে ডলারের দাম ৮৯ টাকা বেঁধে দেয়। আর আমদানিকারকদের কাছে বিক্রির জন্য বিসি সেলিং রেট নির্ধারণ করা হয় ৮৯ টাকা ১৫ পয়সা। যদিও ব্যাংকগুলো আন্তঃব্যাংক লেনদেনে প্রতি ডলারের বিনিময় মূল্য ৮৯ টাকা ৮০ পয়সার প্রস্তাব করেছিল। কিন্তু, তাতেও বাজার স্থিতিশীল না হওয়ায় ডলারের এক রেট উঠিয়ে দিয়ে গত ২ জুন আরও ৯০ পয়সা বাড়িয়ে ডলারের দাম ৮৯ টাকা ৯০ পয়সা নির্ধারণ করা হয়।

গত ৬ জুন প্রতি ডলারের দাম ৯১ টাকা ৫০ পয়সা, ৭ জুন ৯১.৯৫ টাকা, ৮ জুন ৯২ টাকা, ১৩ জুন ৯২.৫০ টাকা, ১৫ জুন ৯২.৮০ টাকা, ২১ জুন ৯২.৯০ টাকা, ২২ জুন ৯২.৯৫ টাকা, ২৮ জুন ৯৩.৪৫ টাকা, ২৯ জুন ৯৩.৪৪ টাকা, ৩০ জুন ৯৩.৪৫ টাকা, ১৪ জুলাই ৯৩.৬১ টাকা, ১৭ জুলাই ৯৩.৯৫ টাকা, ২১ জুলাই ৯৪.৪৫ টাকা এবং ২৫ জুলাই ৯৪.৭০ টাকা হয়। সোমবার আন্তঃব্যাংকে ডলার লেনদেন হয়েছে ৯৪.৯৫ টাকায়, যা ডলারের দামের সর্বোচ্চ রেকর্ড।

About Author

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

  • Click to Chat
  • Click to Chat
  • Click to Chat
  • Click to Chat