১৬ দিনে যারা সবকিছুর সমাধান চাচ্ছেন, তাদের উদ্দেশ্য ভিন্ন : সারজিস

0
Array

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক সারজিস আলম বলেছেন, ‌বিগত ১৬ বছর ধরে যেসব মানুষ কথা বলার সাহস করেননি, তারাই অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে চাচ্ছেন, ১৬ দিনের মধ্যে সব সমস্যার সমাধান হয়ে যাক। তাদের অবশ্যই ভিন্ন কোনো উদ্দেশ্য রয়েছে।

বুধবার (২১ আগস্ট) দুপুরে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে আন্দোলনে আহত ব্যক্তিদের দেখতে গিয়ে এ কথা বলেন তিনি।

সারজিস বলেন,আমরা কোনো একক বৈষম্যের বিরুদ্ধে লড়াই করিনি। দেশের সব সেক্টরে থাকা বৈষম্যের বিরুদ্ধে লড়েছি। ১৬ বছরে ফ্যাসিস্ট সরকার দেশকে দুর্নীতির বাংলাদেশে পরিণত করেছে। আমরা যদি এতে কাজ করতে যাই, মাথা থেকে গোড়া পর্যন্ত যেতে সময় লাগবে। এখন মাথাগুলো শুরু হয়েছে, দিন দিন প্রতিটি ধাপে যাওয়া হবে।

তিনি বলেন, এত বড় একটি ক্ষতপূর্ণ রাষ্ট্রের সংশোধনের জন্য সময় প্রয়োজন। সেই সময়টুকু না দিয়ে যদি বিভিন্ন জায়গায় অবরোধ করা হয়, এর মানে হচ্ছে রাষ্ট্রের স্থিতিশীল অবস্থা হওয়ার জন্য যে গতি দরকার, তাতে তারা বাধা দিচ্ছেন। তাদের অবশ্যই ভিন্ন কোনো উদ্দেশ্য রয়েছে।

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে সময় দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে সারজিস আলম বলেন, আপনারা অন্তর্বর্তী সরকারকে সময় দিন। আপনার জায়গা থেকে সমালোচনা করুন। আমাদের কাছে আসুন। আমরা অন্তর্বর্তীকালীন সরকার হোক কিংবা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন- এই প্ল্যাটফর্মগুলোর সঙ্গে আপনাদের বসার ব্যবস্থা করে দেবো। কিন্তু পূর্বশর্ত হচ্ছে, রাষ্ট্রকে স্থিতিশীল অবস্থায় আনার জন্য তিন থেকে ছয় মাস অবশ্যই সময় দিতে হবে।

সাংবাদিকদের উদ্দেশে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের এই সমন্বয়ক বলেন, এতদিন যে কথাগুলো বলা উচিত ছিল, আপনারা বলতে পারেননি। কিংবা আপনাদের বলতে দেওয়া হয়নি। এটিই সত্য। যে ঘটনাগুলো দেখেছেন, কিন্তু প্রকাশ করতে পারেননি, সে বিষয়গুলো প্রকাশ করুন। কারণ, এটি আপনাদের দায়বদ্ধতা।

হাসপাতালের পরিস্থিতি নিয়ে সারজিস বলেন, প্রতিটি হাসপাতালে গত ১৬ বছরে সিন্ডিকেট নামধারী মধ্যস্থতাকারী কিছু রক্তচোষা মানুষ তৈরি হয়েছে। তাদের উদ্দেশ্য বলছি, আপনাদের টাকা খাওয়ার যে ব্যবসা, আপনারা যদি বন্ধ না করেন, তাহলে আপনার সিন্ডিকেট কীভাবে বন্ধ করতে হয়, সেটি ছাত্রসমাজ খুব ভালো করে জানে।

এদিকে, বুধবার সকাল সাড়ে ৭টা থেকে চমেক অধ্যক্ষ সাহেনা আক্তারের পদত্যাগের দাবিতে নতুন অ্যাকাডেমিক ভবনের সামনে আন্দোলন শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। দুপুর ১টার দিকে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে যোগ দেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম দুই সমন্বয়ক সারজিস আলম ও হাসনাত আবদুল্লাহ।

চমেকের অধ্যক্ষ সাহেনা আক্তারের উদ্দেশে সারজিস আলম বলেন, তিনি একটি প্রতিষ্ঠানের প্রধান, শিক্ষার্থীদের অভিভাবক। তিনি যদি সেই দায়িত্ব পালন করতে না পারেন, তাহলে তার যদি ন্যূনতম ব্যক্তিত্ব, লজ্জা ও দায়বদ্ধতা থেকে পদটি ছেড়ে দেওয়া উচিত। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চমেকের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে একাত্মা প্রকাশ করছে।

এসময় শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, যেসব শিক্ষক, উপাচার্য ও প্রতিষ্ঠান প্রধান আওয়ামী লীগ সরকারের পা চেটে শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে গেছে তাদের ওই পদে থাকার কোনো অধিকার নেই। আপনারা আপনাদের শিক্ষকতার নৈতিক অবস্থান হারিয়েছেন। আমরা শামসুজ্জোহা স্যারের নাম শুনেছি। তার নিজের বুকে বুলেট বিদ্ধ হওয়ার আগ পর্যন্ত কেউ তার শিক্ষার্থীদের গায়ে হাত দিতে পারেনি।

About Author

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

  • Click to Chat
  • Click to Chat
  • Click to Chat
  • Click to Chat