845592_188
Array

বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তঘেঁষা রোহিঙ্গা অধ্যুষিত মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের মংডুতে সরকারি বাহিনীর সাথে সশস্ত্র গোষ্ঠী আরাকান আর্মির তুমুল সঙ্ঘাত চলমান রয়েছে।

বৃহস্পতিবার ভোর থেকে শুরু হওয়া একের পর এক মর্টার শেল ও ভারী গোলার বিকট শব্দে এপারে কক্সবাজারের টেকনাফ সীমান্তের বাসিন্দাদের মাঝে আতঙ্ক বাড়ছে।

সীমান্তের বাসিন্দারা বলছেন, গত চার মাস ধরে নিজেদের অস্থিত্ব রক্ষায় মিয়ানমারের সরকারি বাহিনীর সাথে আরাকান আর্মির সঙ্ঘাত চলছে। এতে ওপারের বেশ কিছু সীমান্ত চৌকি এখন বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মির দখলে। ওপারে যুদ্ধের কারণে এপারের সীমান্তের টেকনাফের নাইট্যংপাড়া, কায়ুকখালীপাড়া, জালিয়াপাড়া, চৌধুরীপাড়া, উত্তরপাড়া, দক্ষিণপাড়া, কুলালপাড়া, খাংগার ডেইল, নাজিরপাড়া, মৌলভীপাড়া, সাবরাংয়ের মগপাড়া, আছারবনিয়া, ডেগিল্লাবিল, নয়াপাড়া, শাহপরীর দ্বীপের জালিয়াপাড়ায় মর্টারশেল, বিমান হামলা ও বোমার বিকট শব্দে বাড়ি-ঘর কাঁপছে। চরম আতঙ্কে রয়েছেন সীমান্ত এলাকাসহ পাশ্ববর্তী এলাকার বাসিন্দারা।

ফোনে রাখাইনে সুদাপাড়ার বাসিন্দা ফয়সাল বলেন, ‘এখনো ওপারে মিয়ানমারে তীব্র লড়াই চলছে। সকাল থেকে গ্রাম খালি করতে মাইকিং করা হচ্ছে। লোকজন না সরায় যুদ্ধবিমান দিয়ে হামলা চালানো হচ্ছে। গইন্যা পাড়া ও গজ্জনিয়া পাড়াসহ কয়েকটি গ্রামে বিমান হামলা চালাচ্ছে জান্তা বাহিনী।’

উখিয়া রোহিঙ্গা ক্যাম্পের বাসিন্দা মোহাম্মদ হোসাইন বলেন, ‘বৃহস্পতিবার বিকালেও ওপারে মংডুতে যুদ্ধ বিমান হামলা চালানো হয়েছে। এতে হতাহতের খবর পাওয়া যাচ্ছে। সেখানে থাকা রোহিঙ্গারা প্রাণ বাঁচাতে এদিক-ওদিক ছুটছে। অনেকে আবার এপারে আসতে চেষ্টা চালাচ্ছে বলে শুনেছি।’

এ দিকে, সীমান্তের ওপারে রাখাইনে চলমান সঙ্ঘাতের কারণে নতুন করে বাংলাদেশে যাতে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ না ঘটে সেজন্য বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়েছে বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড এবং সীমান্তরক্ষী বর্ডার গার্ড বিজিবি।

টেকনাফ-২ বিজিবির অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্ণেল মো: মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘মিয়ানমারের রাখাইনে গোলাগুলি চলছে। এ কারণে এপারে বিকট শব্দ পাওয়া যাচ্ছে। কিন্তু আমাদের সীমান্তবর্তী লোকজনের ভয়ের কোনো কারণ নেই। সীমান্তে বিজিবি কঠোর অবস্থানে রয়েছে। পাশাপাশি এ সমস্যাকে কেন্দ্র করে নতুন করে যাতে কোনো রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ ঘটতে না পারে সেজন্য সীমান্তে টহল জোরদার করা হয়েছে।’

টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ আদনান চৌধুরী বলেন, ‘ওপারে সঙ্ঘাত বাড়ায় সীমান্তে নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। মিয়ানমারে চলমান সঙ্ঘাতে সীমান্তে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীগুলো সতর্ক অবস্থায় রয়েছে। গোলার শব্দে সীমান্তের মানুষেরা যাতে নির্ভয়ে থাকেন সেজন্য সীমান্তের বসবাসকারীদের খোঁজ খবর রাখছি।’

About Author

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

  • Click to Chat
  • Click to Chat
  • Click to Chat
  • Click to Chat