বিএনপির সোহেল, হেলাল, নীরবসহ ১৩৬ নেতা-কর্মীর সাজা
বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন নবী খান সোহেল, তথ্যবিষয়ক সম্পাদক আজিজুল বারী হেলাল, স্বেচ্ছাসেবকবিষয়ক সম্পাদক মীর সরাফত আলী সপু, যুবদলের সাবেক সভাপতি সাইফুল আলম নীরবসহ ১৩৬ নেতা-কর্মীকে কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।সোমবার (২০ নভেম্বর) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেটদের পৃথক আদালত এসব মামলার রায় ঘোষণা করেন।
পুলিশের কাজে বাধা দেয়ার ঘটনায় রাজধানীর পল্টন থানার মামলায় হাবিব-উন-নবী খান সোহেল ও সুলতান সালাউদ্দিন টুকুসহ ২৫ জনের দুই বছরের কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আতাউল্লাহ এ রায় ঘোষণা করেন।
এ মামলায় দণ্ডপ্রাপ্ত অন্য আসামিরা হলেন বিএনপির তথ্য ও গবেষণাবিষয়ক সম্পাদক আজিজুল বারী হেলাল, যুবদলের সাবেক সভাপতি সাইফুল আলম নীরব, স্বেচ্ছাসেবক দলের সেক্রেটারি রাজিব আহসান, ছাত্রদলের সাবেক সেক্রেটারি আকরামুল হাসান মিন্টু, হাবিবুর রশিদ হাবিব ও যুবদল দক্ষিণের সভাপতি এনামুল হক এনাম।
এছাড়া অপরাধ প্রমাণিত না হওয়ায় যুবদলের সাংগঠনিক সম্পাদক ইসহাক সরকারসহ ১২ জনকে খালাস দিয়েছেন আদালত। আসামিরা ২০১৭ সালের ২৮ অক্টোবর বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে পুলিশের কাজে বাধা দেন ও ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করেন। এ ঘটনায় পল্টন মডেল থানার এসআই আবুল কালাম আজাদ একটি মামলা করেন।
সোহেল-হেলালসহ ১৪ জনের দেড় বছরের কারাদণ্ড
২০১৫ সালের জানুয়ারিতে বিএনপির হরতাল-অবরোধ চলাকালে নিউমার্কেট ও নীলক্ষেত এলাকায় পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করার মামলায় বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব হাবিব-উন-নবী খান সোহেল, তথ্যবিষয়ক সম্পাদক আজিজুল বারী হেলাল ও স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরাফত আলী সপুসহ ১৪ জনকে দেড় বছর করে কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আতাউল্লাহ এ রায় ঘোষণা করেন। এরমধ্যে দণ্ডবিধি ১৪৩ ধারায় আসামিদের ছয় মাসের কারাদণ্ড ও ২ হাজার টাকা অর্থদণ্ড দেয়া হয়। আসামিরা পলাতক।
নীরবসহ ৭ নেতাকর্মী আড়াই বছরের কারাদণ্ড
২০১৩ সালে রাজধানীর তেজগাঁও থানার নাশকতার মামলায় যুবদলের সাবেক সভাপতি সাইফুল আলম নীরবসহ বিএনপির ৭ কর্মীকে আড়াই বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট শেখ সাদী এ রায় ঘোষণা করেন। কারাদণ্ডের পাশাপাশি তাদের দুই হাজার টাকা অর্থদণ্ড ও অনাদায়ে আরো ৭ মাসের কারাদণ্ড দেয়া হয়।
কারাদণ্ডপ্রাপ্ত অন্য আসামিরা হলেন সাজেদুল ইসলাম সুমন, গান্ডু শাহিন, বেল্লাল হোসেন, জাকির হোসেন, আনোয়ারুজ্জামান আনোয়ার ও আবু বক্কর সিদ্দিক। আসামিদের মধ্যে নীরব কারাগারে, বাকিরা পলাতক।
জানা যায়, ২০১৩ সালের মে মাসে বিএনপির হরতাল অবরোধ চলাকালে রাজধানীর তেজগাঁও থানা এলাকায় নাশকতার অভিযোগে মামলা করে পুলিশ। মামলার পর আসামিদের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করা হয়।
পুলিশের ওপর হামলা : ৬২ নেতাকর্মীর সাড়ে ৩ বছরের কারাদণ্ড
রাজধানীর বংশালে পুলিশের ওপর হামলার মামলায় বিএনপি ও এর অঙ্গ সংগঠনের ৬২ নেতাকর্মীকে সাড়ে ৩ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। এ মামলার অন্যতম আসামি বিএনপির সাবেক মহাসচিব খোন্দকার দেলোয়ার হোসেনের ছেলে খন্দকার আখতার হামিদ খান পবন। ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ শেখ সাদী এ রায় ঘোষণা করেন। আসামিরা পলাতক রয়েছেন।
মামলার এজাহারে বলা হয়, ২০১৮ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর দুপুর ২টা ২০ মিনিটের দিকে রাজধানীর নবাব কাটরা নিমতলীর এলাকার হোটেল সুফিয়ার সামনে দোকানপাট ভাঙচুর, পুলিশের ওপর হামলা ও দায়িত্ব পালনে বাধা দেয়। এ ঘটনায় পুলিশ বংশাল থানায় বিএনপি ও এর অঙ্গ সংগঠনের ৮০ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা করে।
বিএনপির ১৫ নেতাকর্মীর ২ বছর ৩ মাসের কারাদণ্ড
চকবাজার থানার মামলায় বিএনপির ১৫ জন নেতাকর্মীকে ২ বছর ৩ মাসের কারাদণ্ড, ৫ হাজার টাকা অর্থদণ্ড ও অনাদায়ে ১ মাসের কারাদণ্ড দেন আদালত। ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো: আতাউল্লাহ এ রায় ঘোষণা করেন।
দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন বিএনপিকর্মী রফিকুল ইসলাম রাসেল, ইমরান আহমেদ রনি, ইরফান, ফরহাদ উল্লাহ বান্টি, হাজী আব্দুল রাজ্জাক, রুবেল, আনোয়ার হোসেন রনি, জিয়াউল হক জনি, হাজী কামাল ওরফে কামাল উদ্দিন ঝন্টু, জাহিদ, আবদুর রহিম উদ্দিন, রাজিব আহম্মেদ, হাজী আবদুর হামিদ, ইমরান ও আজিজুল্লাহ। আসামিরা পলাতক আছেন।
জানা যায়, ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বরে চকবাজার এলাকায় বিএনপির নেতাকর্মীরা ভাঙচুর ও পুলিশের ওপর হামলা করে। এ ঘটনায় পুলিশ চকবাজার থানায় মামলা করেন।
নাশকতার মামলায় বিএনপির ১৬ নেতাকর্মীর কারাদণ্ড
শাহজাহানপুর থানার নাশকতার মামলায় বিএনপির ১৬ নেতাকর্মীর ২ বছর ৩ মাসের কারাদণ্ড, ৫ হাজার টাকা অর্থদণ্ড ও অনাদায়ে এক মাসের কারাদণ্ড দেন আদালত। ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো: আতাউল্লাহ এ রায় ঘোষণা করেন।
দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন হাসানুল হক মাহমুদ ওরফে কাকন, দুলাল বেপারী, ফরহাদুল ইসলাম, আজিজ, শহিদুল্লাহ টিপু, শাহজালাল, সাইদুর রহমান রিপন, হুমায়ুন কবীর নাহিদ, স্বপন ভুঁইয়া, জাহাঙ্গীর, শরিফুল ইসলাম, মনসুর, কসাই হোসেন, হাবু, আব্দুল্লাহ জামান ও সোহাগ ভূঁইয়া। আসামিরা সবাই পলাতক আছেন।
জানা যায়, ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বরে শাহজাহানপুর এলাকায় বিএনপির নেতাকর্মীরা ভাঙচুর ও পুলিশের ওপর হামলা করেন। এ ঘটনায় পুলিশ চকবাজার থানায় মামলা করেন।
দ্রুত বিচার আইনে বিএনপিকর্মীর কারাদণ্ড
২০১৩ সালের এপ্রিলে পল্টন থানার মামলায় মেহেদী হাসান এক বিএনপি কর্মীকে দ্রুত বিচার আইনের ৪/৫ ধারায় ২ বছরের কারাদণ্ড, ৫ হাজার টাকা অর্থদণ্ড ও অনাদায়ে আরো ৩ মাসের কারাদণ্ড দেন আদালত। ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মেহেরা মাহাবুব এ রায় ঘোষণা করেন। এ মামলা সূত্রে জানা যায়, ২০১৩ সালের এপ্রিল মাসে পল্টন থানা এলাকায় নাশকতা করে বিএনপির নেতাকর্মীরা। এ সময় পুলিশ একটি মামলা করে।
এর আগে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মদ শাহজাহান, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা হাবিবুর রহমান (হাবীব), ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আবদুল আলিম (নকি), বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য শেখ রবিউল আলম, যুবদলের সাংগঠনিক সম্পাদক ইসহাক সরকারের সাজা হয়েছে।