অনির্বাচিতদের হাতে ক্ষমতা তুলে দেওয়ার আর কোনো ষড়যন্ত্র হতে দেওয়া হবে না : কাদের

0
Array

এদেশ কি মুক্তিযুদ্ধের আদর্শে চলবে, না ৪৭ সালের দ্বিজাতিতত্ত্ব ভিত্তিতে চলবে তা ফাইনালাইজ করতে হবে। এর মীমাংসা আমাদের খুঁজে পেতে হবে।’

আগামী নির্বাচনকে দেশের ‘আরেক মুক্তিযুদ্ধ’ উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘অনির্বাচিতদের হাতে ক্ষমতা তুলে দেওয়ার আর কোনো ষড়যন্ত্র হতে দেওয়া হবে না। আদর্শ প্রতিষ্ঠার জন্য মরতে হয় মরব, কিন্তু পথ ছাড়ব না।’

আগামীকাল শনিবার আওয়ামী লীগের শান্তি ও উন্নয়ন সমাবেশকে সামনে রেখে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।

ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাতিল করেছে আদালত। এই তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থার জন্য আমরাও ফাইট করেছিলাম। কিন্তু এটি ২০০১ ও ২০০৬ সালে বিতর্কিত করেছে কারা? বিচারপতি খায়রুল হক তো সংবিধানকে কচুকাটা করেন নি, তিনি একে সঠিক জায়গায় উপস্থাপন করেছে। বিএনপি সংবিধানকে কচুকাটা করেছে।

‘গণতন্ত্রের ভালো উদাহরণ পাকিস্তান নয়। সেই পাকিস্তান ছাড়া পৃথিবীর কোনো দেশে তত্ত্বাবধায়ক নেই। এটি আমাদের গণতন্ত্রকে ছোট করা। আমরা দীর্ঘ প্রক্রিয়া রিফর্ম করে এই পর্যায়ে এসেছি, সেটাকে কটাক্ষ করা, অবমাননা করা, খাটো করা। প্রকারান্তরে আমাদের দেশকে, দেশের অর্জনকে ছোট করা—যেটি বিএনপি চেয়েছিল জামায়াতকে সঙ্গে নিয়ে,’ বলেন তিনি।

‘যুদ্ধাপরাধীদের রক্ষা ও গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করতে ২০১৪ ও ১৫ সালে আগুন সন্ত্রাস সৃষ্টি করেছিল বিএনপি,’ মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘সরকার গত ১৫ বছরে বাংলাদেশের চেহারা বদলে দিয়েছে, বাংলাদেশের রূপান্তরের এক বিস্ময়কর উদাহরণ স্থাপন করেছে, উন্নয়ন অর্জনে বাংলাদেশকে বিশ্বে রোল মডেল হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে।

শেখ হাসিনা সরকার নির্বাচন ব্যবস্থাকে আমূল সংস্কার করেছে’ উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘সারা বিশ্বের সঙ্গে সঙ্গত রেখের রিপ্রেজেন্টেশন অব পিপল অর্ডারে ৮২টির মতো সংশোধনী এনেছে। কোনো কোনো উন্নত দেশের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার চেয়েও আরও আধুনিক এই ব্যবস্থা। আমরা যখন বিদেশি প্রতিনিধিদের সাথে এটি নিয়ে বসেছিলাম, তখন বাংলাদেশের এই অর্জন সম্পর্কে তাদের বুঝাতে সক্ষম হয়েছি।’

ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আধুনিক একটা নির্বাচন ব্যবস্থা যখন হয়েছে ত্রটিমুক্ত একটা ইলেকশন করার জন্য, যখন বাংলাদেশের ইলেকশন কমিশন একটি স্বাধীন ও কর্তৃত্বপূর্ণ নির্বাচন অনুষ্ঠানের প্রস্তুতি নিচ্ছে সে সময় যারা বাংলাদেশের গণতন্ত্রকে ধ্বংস করতে চায়, নির্বাচন ব্যবস্থাকে ধ্বংস করতে চায় তারা বাংলাদেশকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা থেকে, স্বাধীনতার আদর্শ থেকে সরিয়ে চিরাচরিত পাকিস্তানী স্টাইলের রাষ্ট্র বানানোর চক্রান্ত করছে, তারা আবার চক্রান্ত করছে।’

শেখ হাসিনাকে আবারও নির্বাচিত করার জন্য তিনি মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের সব শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
‘আজকে আমাদেরকে ঘুরে দাঁড়াতে হবে। ইতিহাস বিকৃতির অপচেষ্টা চলছে, চ্যালেঞ্জ তারা করছে, আমাদের লড়াই করে তা মোকাবেলা করতে হবে। এদেশ কি মুক্তিযুদ্ধের আদর্শে চলবে, না ৪৭ সালের দ্বিজাতিতত্ত্ব ভিত্তিতে চলবে তা ফাইনালাইজ করতে হবে। এর মীমাংসা আমাদের খুঁজে পেতে হবে।

‘সার্বিক পরিস্থিতির আলোকে এ সমস্যাগুলোর সমাধান ও’য়ানস ফর অল’ করতে হবে। বারবার ফাঁকফোকড় রেখে এই অপশক্তিকে বারবার মাথা তুলে দাঁড়ানোর সুযোগ দেওয়া উচিত নয়। কাজেই আজকে দায়িত্ব নিতে হবে শেখ হাসিনার একার নয়, মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করতে হবে। এই অপশক্তি চিরতরে অবসান ঘটাতে হবে। সেজন্য আমাদের সবাইকে কাজ করতে হবে। মাঠে থাকতে হবে। রাজপথে থাকতে হবে,’ বলেন তিনি।

আগামীকালকের শান্তি সমাবেশ সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘আমরা শান্তি সমাবেশ করেছি, আগামীকালকেও করব। আমরা অশান্তি করতে চাই না। কারণ আমরা ক্ষমতায় আছি। আমরা নির্বাচন চাই শান্তিপূর্ণ, পরিবেশ চাই শান্তিপূর্ণ। আমাদের দ্বারা অশান্তি সৃষ্টি হওয়ার কোনো কারণ নেই। অশান্তি তারা চায়, যারা এই নির্বাচন করতে আগ্রহী নন, প্রশ্নবিদ্ধ করতে চান, তারা অরাজকতা-নাশকতা-বিশৃংখলা করতে চায় গোটা পরিবেশটা নষ্ট করতে চায়।’

About Author

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

  • Click to Chat
  • Click to Chat
  • Click to Chat
  • Click to Chat