আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে এ দেশে আর কোনো নির্বাচন হবে না : গণতন্ত্র মঞ্চ

গণতন্ত্র মঞ্চের সমন্বয়ক ও ভাসানী অনুসারী পরিষদের আহ্বায়ক শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু বলেছেন, আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে এ দেশে আর কোনো নির্বাচন হবে না। একতরফা নির্বাচন আর কোনোভাবেই সম্ভব না এবং তা করতেও দিব না। যারা এই সরকারের অধীনে নির্বাচনে যাবে তারা ‘নব্য রাজাকার’ হিসেবে চিহ্নিত হবে এবং ভবিষ্যতে তাদের বিচারের আওতায় আনা হবে।
বুধবার (২৭ সেপ্টেম্বর) বিকেলে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে একদফার যুগপৎ আন্দোলনের অংশ হিসেবে গণতন্ত্র মঞ্চের পদযাত্রাপূর্ব সমাবেশে এ কথা বলেন তিনি।
ভাসানী অনুসারী পরিষদের এই আহ্বায়ক বলেন, আমেরিকাতে বসে প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা করছেন- জনগণকে নিয়ে আমেরিকাকে স্যাংশন দিবেন। আপনার সাথে কি জনগণ আছে? আপনি অবৈধভাবে জোর করে ক্ষমতায় থাকতে চাচ্ছেন। আপনার কারণে আজকে এই স্যাংশন, যা বাংলাদেশের জন্য অত্যন্ত লজ্জার।
ক্ষমতাসীনদের উদ্দেশে রফিকুল ইসলাম বাবলু বলেন, দেখতে থাকুন- অক্টোবর মাসের মধ্যে জনগণ আপনাদের ক্ষমতা থেকে টেনে-হিঁচড়ে নামিয়ে ছাড়বে।
নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, এই সরকার পরপর দুবার মানুষের ভোটের অধিকার ক্ষুণ্ন করেছে। এবার আর সে সুযোগ নিতে পারবে না। জনগণ জেগে উঠেছে, তারা আর কোনো একতরফা প্রহসনের নির্বাচন হতে দেবে না।
তিনি বলেন, এই সরকার মিথ্যাবাদী সরকার। আজকে রিজার্ভের যে পরিস্থিতি, তাতে পাঁচ মাস পরে মানুষ খাবার পাবে কিনা- আজ সেই প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।
গণতন্ত্র মঞ্চের এই নেতা বলেন, আমরা কখনো ক্ষমতায় ছিলাম না, তাই দেশে লুটপাটও করিনি। দেশের জনগণ লুটপাটের এই সরকারকে আর এক মুহূর্তও ক্ষমতায় দেখতে চায় না। তারা এদের পদত্যাগ চায়। সুতরাং এই সরকারকে পদত্যাগ করতেই হবে।
বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, মার্কিন ভিসানীতি কার্যকর হয়েছে, তাতেই রাতের ঘুম হারাম হয়ে গেছে। এখন যদি গার্মেন্টসের ওপর নিষেধাজ্ঞা আসে, তবে কী পরিস্থিতি হবে? তাই সরকারকে বলব, আমেরিকা থেকে ফিরে সংবাদ সম্মেলন করে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করে ভালোয় ভালোয় ক্ষমতা থেকে বিদায় নেন। অন্যথায় জনগণ আপনাদের পদত্যাগে বাধ্য করবে। তখন পালাবার পথও পাবেন না।
গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি বলেন, সরকার নাকি সভা-সমাবেশে বাধা দেয় না। কিন্তু বাস্তবতা হলো- শ্রমিক সংগঠনগুলো হল বুকিং নেওয়ার পরেও বিভিন্ন অজুহাতে আমাদের বাধার সৃষ্টি করা হয়। কারণ, দেশে কোনো গণতন্ত্র নেই, সুশাসন নেই।
তিনি বলেন, এই সরকার ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য আবারও একতরফা নির্বাচনের নীলনকশার ষড়যন্ত্র করছে। আমরা জনগণকে সাথে নিয়ে তা প্রতিহত করব। আমাদের এ কর্মসূচি সরকারের পতনের কর্মসূচি এবং এই কর্মসূচিতে আমরা জয়লাভ করব। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অধীনেই আগামী নির্বাচন হতে হবে।
জেএসডির সিনিয়র সহসভাপতি তানিয়া রবের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক শহীদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপনের সঞ্চালনায় সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন- রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক অ্যাডভোকেট হাসনাত কাইয়ূম, নাগরিক ঐক্যের সাধারণ সম্পাদক শহীদুল্লাহ কায়সার, ভাসানী অনুসারী পরিষদের সদস্য সচিব হাবিবুর রহমান রিজু, জেএসডির সহসভাপতি সিরাজ উদ্দীন, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির রাজনৈতিক পরিষদের সদস্য আকবর খান, গণসংহতি আন্দোলনের সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য জুলহাস নাইন, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের সাংগঠনিক সমন্বয়ক ইমরান ইমন প্রমুখ। পরে প্রেস ক্লাব ও এর আশপাশের এলাকায় পদযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়।