সরকার পদত্যাগ না করলে সঙ্ঘাতের আশঙ্কা মির্জা ফখরুলের
সরকার পদত্যাগ না করলে দেশ সঙ্ঘাতের দিকে যাবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
বৃহস্পতিবার বিএনপি চেয়ারপারসনের গুলশান রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বিএনপি মহাসচিব এই শঙ্কা প্রকাশ করেন।
তিনি বলেন, যতদিন এ সরকার থাকবে, এটা আরো সঙ্ঘাতের দিকে যাবে, আরো খারাপের দিকে যাবে এবং সঙ্ঘাত আরো বাড়তে থাকবে। এখনো তো সঙ্ঘাত শুরু হয়নি।
মির্জা ফখরুল বলেন, আওয়ামী লীগ যেভাবে এগুচ্ছে তাতে তো জনগণ রুখে দাঁড়াবে… পরিষ্কার বুঝা যাচ্ছে এটা। জনগণই তাদের অধিকার আদায় করবে, জনগণ তো লড়াই করে, যুদ্ধ করেই তো স্বাধীনতা এনেছে। ১৯৯০ সালে এরশাদের সময়ে জনগণ তো লড়াই করে, সংগ্রাম করে গণতন্ত্র ফিরিয়ে এনেছে। এখনোও জনগণ লড়াই করছে, সংগ্রাম করছে।
ক্ষমতাসীন সরকারের উদ্দেশে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আপনাদের শুভ বুদ্ধির উদয় হোক, দেশকে রক্ষার জন্য, মানুষের কল্যাণের জন্য গণতন্ত্রকে রক্ষার জন্য, মানুষের অধিকারকে রক্ষা করার জন্য আপনারা দয়া করে এই জায়গা থেকে সরে পদত্যাগ করেন। পদত্যাগের দাবি তো আমরা সেজন্যই জানিয়েছি।
তিনি বলেন, ‘প্লিজ এই জায়গা থেকে সরে আসেন। এসে পদত্যাগ করেন, করে সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণ ভোট দিয়ে তাদের একটা সরকার নির্বাচিত করতে পারে, তাদের একটা জনগণের পার্লামেন্ট গঠন করতে পারে তার ব্যবস্থা করেন।’
মানবাধিকার সংগঠন ‘অধিকার’ -এর সম্পাদক আদিলুর রহমার খান ও পরিচালক এএমএম নাসির উদ্দিনের সাজা প্রদানের বিষয়ে জুডিশিয়াল ক্যাডার সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের বিবৃতি প্রদানের নিন্দা জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, এহেন বিবৃতি প্রদান নজিরবিহীন ঘটনা। এটা নিঃসন্দেহে নিরপেক্ষ আচরণের অন্তরায় হয়ে দাঁড়ায়। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সভা মনে করে, বিচার ব্যবস্থার সকল পর্যায়ের বিচারকদের বিতর্কিত রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড হতে বিরত থাকা বাঞ্ছনীয়।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমি বারবরই বলে আসছি- আওয়ামী লীগের অধীনে কোনো নির্বাচনই সম্ভব না, এটা পরীক্ষিত। আমরা পরপর দুটি নির্বাচন অতীতে করেছি এবং তাদের অধীনে যে কখনো কোনো সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচন হতে পারে না, জনগণকে ভোট কেন্দ্রে গিয়ে ভোট দিতে পারে না… এ ব্যাপারে সন্দেহ কারোই থাকার কথা নয়।’
তিনি বলেন, ‘তবে এবার যখন নির্বাচন নিয়ে প্রধানমন্ত্রী ভিনদেশে গিয়ে বিদেশীদের কাছে কথা দেন যে- খুব সুন্দর অবাধ নির্বাচন হবে, কোনো চিন্তার কারণ নাই। তখন ইউরোপীয় ইউনিয়ন টপ অবজারভেটারি টিম পাঠিয়েছিল। এই টিমটা খুব এক্সনেটসিভলি তারা ঘুরেছেন। সকল দলের স্টেকহোল্ডারদের সাথে তারা কথা বলেছেন। কথা বলে যেটা তারা পরিষ্কার করে বলেছেন যে- অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ নির্বাচনের পরিবেশ নাই। এখানে অবজারভার টিম পাঠানোর পরিবেশ নেই।’
তিনি আরো বলেন, ‘ওদের (সরকারি দলের নেতাদের) বক্তৃতা শুনলে দেখবেন একটাই জিনিস জোর দিচ্ছে তারা যে- এ সরকারকে রাখতেই হবে…এট দ্য কস্ট অব দ্য কান্ট্রি, এট দ্য কস্ট অব দ্য নেশন, কস্ট অব ডেমোক্রেসি…।’
ফখরুল বলেন, ‘এই যে বিষয়টা এটা কি একটা জাতি যারা দেশের জন্য যুদ্ধ করেছে, যারা লড়াই করেছে, ত্যাগ স্বীকার করেছে সেই জাতি কিভাবে মেনে নেবে?’