সাইবার সিকিউরিটি অ্যাক্ট মানুষের বাক স্বাধীনতার জন্য মারাত্মক হুমকি : রিজভী

0

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী বলেছেন, সাইবার নিরাপত্তা আইন দেশের মানুষের বাক স্বাধীনতার জন্য মারাত্মক হুমকি।

তিনি বলেন, বুধবার জাতীয় সংসদে সাইবার সিকিউরিটি আইন পাস করা হয়েছে। তবে এই আইনেও রাজনীতিক, সাংবাদিক ও সাধারণ মানুষ হয়রানির শিকার হতে পারেন। এর কারণে দেশে মত প্রকাশের আর কোনো স্বাধীনতা থাকলো না। জনগণকে বাকরুদ্ধ করতেই এই আইন পাস করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) দুপুরে রাজশাহী নগরীর ভুবন মোহন পার্কে ডেঙ্গু প্রতিরোধে লিফলেট বিতরণ কর্মসূচি শুরুর আগে এক সংক্ষিপ্ত সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।

রুহুল কবীর রিজভী বলেন, সাইবার সিকিউরিটি আইনে সাংবাদিক ও সাধারণ মানুষ নির্মম শিকার হতে পারেন। এই আইন আগের ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের কার্বন কপি। এটি আরো নিষ্ঠুর ও ভয়ংকর করা হয়েছে। এখানে সাংবাদিকদের নিরাপত্তা আরো ঝুঁকির মধ্যে পড়ে গেল। সাইবার সিকিউরিটি অ্যাক্ট আগের ডিজিটাল সিকিউরিটি আইন থেকেও ভয়ংকর ও নির্মম। মতপ্রকাশের স্বাধীনতা আর থাকল না।

সরকারকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, ওদের লুটপাট, টাকা পাচার, ব্যাংক লুট, ৮০০ কোটি টাকা চুরির বিষয়ে কেউ যাতে কোনো কথা না বলতে পারে, কোনো প্রচার যাতে না করতে পারে, তাই সাইবার সিকিউরিটি আইন পাস করা হয়েছে।

সারা দেশে ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাবের জন্য সরকার দায়ী উল্লেখ করে রুহুল কবির রিজভী বলেন, স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলছেন দুই সিটি করপোরেশন কিছুই করেনি। আর দুই সিটি মেয়র আর স্বাস্থ্যমন্ত্রী তো একই গোয়ালের! তারা কী বুঝবেন। এদের কোনো মায়া-দয়া নেই মানুষের প্রতি। তারা দুঃশাসনের মাধ্যমে তাদের স্বৈরতন্ত্র কায়েম করে আজীবন ক্ষমতায় থাকতে চান। আর চান বলেই মানুষের বাঁচা-মরার বিষয়ে তাদের কোনো মনোযোগ নেই। এ সময় তিনি ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাবের জন্য দেশের সব সিটি করপোরেশনের মেয়ররাও দায়ী বলে অভিযোগ করেন। ডেঙ্গু প্রতিরোধে কোনো পদক্ষেপ না নিয়ে প্রধানমন্ত্রী ক্ষমতা টিকিয়ে রাখার জন্য ঘুরে বেড়াচ্ছেন বলে অভিযোগ করে রুহুল কবীর রিজভী।

তিনি বলেন, দাওয়াত পাক আর না পাক উনি ব্রিকসে যাচ্ছেন, দিল্লিতে যাচ্ছেন। আরো অনেক জায়গায় ঘুরে বেড়াচ্ছেন। কারণ, উনার পায়ের তলায় মাটি নেই। ডেঙ্গু জ্বরে কাঁপছে মানুষ। ওষুধ নেই, চিকিৎসার সরঞ্জাম নেই, নিম্নমানের সরঞ্জাম। অথচ দুই সিটি করপোরেশনের মেয়র উল্লাস করছেন, তারা পিকনিকে যাচ্ছেন।

রুহুল কবীর রিজভী আরো বলেন, যে সরকারকে জবাবদিহি করতে হয় না, ভোট পেতে হয় না, তারা জনগণের ভোটে নির্বাচিত নয়। তাই জীবনের মূল্য তারা দিতে চায় না। প্রধানমন্ত্রী শুধু ঘুরেই বেড়াচ্ছেন। ঢাকায় ইতিমধ্যে আটশ’র কাছাকাছি মানুষ মারা গেছেন। ঢাকা থেকে ডেঙ্গু সারা দেশে ছড়িয়ে পড়েছে।

এক দফা আন্দোলনের মাধ্যমে সরকারের পতন ঘটানো হবে উল্লেখ করে রুহুল কবীর রিজভী বলেন, বিএনপি নেতাকর্মীদের নামে ২০ এর নিচে নয়, ১০০টির ওপরে মামলা রয়েছে। আমার নিজের নামেও ২০০টির ওপরে মামলা রয়েছে। অনেক নেতার নামে ৪০০-এর বেশি মামলা। পৃথিবীর কোনো সভ্য দেশে মামলা দিয়ে রাজনৈতিক তরঙ্গ, আন্দোলনকে কি থামানো যায়? থামানো যাবে না। এক দফা আন্দোলনের মাধ্যমে সরকারের পতন ঘটানো হবে বলে হুঁশিয়ারি দেন রিজভী।

সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বক্তব্য শেষে কয়েকটি এলাকায় ডেঙ্গুবিষয়ক প্রচারপত্র বিতরণ কর্মসূচি শুরু করেন রুহুল কবীর রিজভী। এরপর বিএনপির অন্য নেতাকর্মীরা নগরীর বিভিন্ন এলাকায় ডেঙ্গুবিষয়ক প্রচারপত্র বিতরণ করেন।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন বিএনপির রাজশাহী বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ শাহীন শওকত, ওবায়দুর রহমান চন্দন, বিএনপির কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম, রাজশাহী মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক এরশাদ আলী ঈশা, সদস্যসচিব মামুন-অর-রশিদ, যুগ্ম আহ্বায়ক নজরুল হুদা, জেলা বিএনপির সদস্যসচিব বিশ্বনাথ সরকার, যুগ্ম সম্পাদক সাইফুল ইসলাম মার্শাল প্রমুখ।

About Author

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

  • Click to Chat
  • Click to Chat
  • Click to Chat
  • Click to Chat