হিলারি ক্লিনটন নিজে ফোন দিয়ে পদ্মা সেতুতে বিশ্বব্যাংকের অর্থায়ন বন্ধ করেন : প্রধানমন্ত্রী

0
373312944_207005989047739_2553734887670298101_n
Array

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, একটি ব্যাংকের এমডি পদে থাকার লোভে আমাদের ওপর চাপ দেওয়া হয়েছিলো। একটা বড় দেশ আমাদের ওপর চাপ সৃষ্টি করেছিলো। ওই এমডি মামলায় হেরে যাওয়ার পর আমাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে। বিশ্বব্যাংকের পরিচালনা পরিষদ নয়, বিদায়ী প্রধান সেদিন হিলারি ক্লিনটনের অনুরোধে পদ্মা সেতুতে অর্থায়ন বন্ধ করেছিলো। সূত্র: বিটিভি, বাসস

শুক্রবার বিকেলে ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ছাত্রলীগের আয়োজিত সমাবেশে আওয়ামী লীগ সভাপতি এ কথা বলেন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও বঙ্গমাতা ফজিলাতুন্নেসা মুজিবের স্মরণে এই সমাবেশের আয়োজন করা হয়।

শেখ হাসিনা বলেন, আজ অনেকে মানবাধিকারের কথা বলছে। কিন্তু আমার বাবা-মা-ভাইদের হত্যার পর আমরা বিচারও চাইতে পারিনি। সেদিন কোথায় ছিলো মানবাধিকার, প্রশ্ন করেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, বিএনপি আবারও দেশের নির্বাচনী ব্যবস্থাকে ধবংস করে দেশকে ধ্বংসের মুখে ঠেলে দিতে চাইছে। নির্বাচন তাদের (বিএনপির) উদ্বেগের বিষয় নয়, কারণ তারা আবারও জনগণের ভোটের অধিকার নিয়ে ছিনিমিনি খেলতে চাইছে।

তিনি বলেন, ২০০৮ সালের নির্বাচনেই বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোট জনগণ দ্বারা প্রত্যাখ্যাত হয়ে ৩০টি আসন পেয়েছিল। ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের এ কথাটা জনগণকে মনে করিয়ে দিতে হবে যে, ওরা ভোট করতে আসে না এবং ভোটও পায় না। কারণ ওরা তো জঙ্গিবাদী, লুটেরা, সন্ত্রাসী। মানুষের শান্তি ও সম্পদ ওরা কেড়ে নেয়। মানুষের ঘরবাড়ি কেড়ে নেয়। ঘরবাড়ি কেড়ে নিয়ে সেখানে পুকুর কেটে কলাগাছ লাগিয়ে দিতেও আমরা তাদের দেখেছি। কাজেই লুটেরা, সন্ত্রাসী ও জঙ্গিবাদে বিশ্বাসীরা মানুষের কোন কল্যাণ করতে পারে না।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, এতিমের অর্থ আত্মসাৎকারী, ১০ ট্রাক অস্ত্র চোরাকারবারী ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা করে আমাদের আইভি রহমানসহ ২২ জন নেতা-কর্মীকে হত্যা করেছে। প্রতিটি ক্ষেত্রে বাংলাদেশকে তারা হেয় প্রতিপন্ন করেছে। ইলেকশন তাদের কথা নয়, তারা জনগণের ভোটের অধিকার নিয়ে আবার ছিনিমিনি খেলতে চায়। কারণ তাদের জন্মই হয়েছে অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলকারির হাতে। তারা কখনও গণতন্ত্রে বিশ্বাস করেনি, তারা নাকি এখন গণতন্ত্র উদ্ধার করবে।

কবিগুরুর কবিতার পংক্তি উদয়ের পথে শুনি কার বাণী/ ভয় নাই ওরে ভয় নাই? নিঃশেষে প্রাণ যে করিবে দান/ ক্ষয় নাই তার ক্ষয় নাই” উদ্ধৃত করে জাতির পিতার কন্যা ও আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, আমি বঙ্গবন্ধুর আদর্শ নিয়েই পথ চলি। আমার কোন ভয় নেই, দেশের মানুষকে ভালবাসি, স্বাধীনতার চেতনায় বাংলাদেশকে গড়ে তুলবো।

শেখ হাসিনা বলেন, আমার ছাত্রলীগের ছেলে-মেয়েরা ’৪১ সালের স্মার্ট বাংলাদেশের কান্ডারি হবে। আমি সেটাই তোমাদের কাছে চাই। শুধু ’৪১ এও থেমে থাকবে না বাংলাদেশ, ২১০০ সালের জন্য ডেল্টা প্ল্যানও আমি করে দিয়ে গেছি। কাজেই এই বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা আর কেউ বাধাগ্রস্ত করতে পারবে না।

তিনি বলেন, অতন্ত্র প্রহরীর মত ছাত্রলীগকে সবসময় সজাগ থাকতে হবে। সবথেকে বড় কথা শিক্ষা গ্রহণ করতে হবে। শিক্ষা, শান্তি, প্রগতি-ছাত্রলীগের মূলনীতি। এই নীতি মেনে ছাত্রলীগকে চলতে হবে।

আওয়ামী লীগের জন্য তার ছাত্রদলই যথেষ্ট’ – খালেদা জিয়ার এই বক্তব্য উদ্ধৃত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ছাত্রদলের মাধ্যমে ছাত্রদের হাতে অস্ত্র তুলে দিয়েছিলেন খালেদা জিয়া। আর তিনি ছাত্রদের হাতে তুলে দিয়েছিলেন কাগজ-কলম। অশিক্ষিত-মূর্খদের হাতে দেশ এগোতে পারে না। এরা মানুষের কল্যাণে কাজ করতে পারে না।

প্রধানমন্ত্রী ছাত্রলীগের প্রতিটি নেতা-কর্মীকে পাঠে মনোনিবেশ করে নিজেদের যোগ্য নাগরিক হিসেবে গড়ে তোলার পাশাপাশি তার সরকারের করে দেয়া সুযোগকে কাজে লাগিয়ে উদ্যোক্তা হিসেবে নিজেদের গড়ে তোলারও পরামর্শ দেন।

পেনশন নিয়ে অপপ্রচারের কঠোর সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিএনপির কিছু নেতা বলছে পেনশন নাকি নির্বাচনী অর্থ সংগ্রহ করার জন্য। এর থেকে লজ্জার আর কী হতে পারে। বিএনপি নিজেরা কিছু করতে পারে না, তাই অন্যের সাফল্য দেখতে পারে না। আমি ছাত্রলীগকে বলব তাদের দায়িত্ব নিতে হবে, মানুষকে বলতে হবে পেনশনের টাকা খোয়া যাবে না। মানুষের ভবিষ্যতের জন্য এই পেনশন করা হয়েছে।

ছাত্রসমাবেশে ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের সমাবেশে বক্তৃতা করেন। ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকরা এ সময় মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন। ছাত্র সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন এবং সঞ্চালনা করেন সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান।

মহাসমাবেশে শেখ হাসিনার বিচক্ষণ নেতৃত্বে জাতির পিতার আদর্শ অনুসরণ করে দেশ ও জনগণের কল্যাণে নিজেদের বর্তমানকে উৎসর্গ করার জন্য এবং আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নির্বাচনী প্রতীক নৌকার পক্ষে ব্যালট বিপ্লবের মাধ্যমে বিজয়ী হওয়ার জন্য লাখো শিক্ষার্থীকে শপথ পাঠ করান ছাত্রলীগের সভাপতি। সম্পাদনা: এল আর বাদল

About Author

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

  • Click to Chat
  • Click to Chat
  • Click to Chat
  • Click to Chat