ব্রিকস শীর্ষ সম্মেলনে শি জিনপিংয়ের সঙ্গে বৈঠক করবেন শেখ হাসিনা
দক্ষিণ আফ্রিকার জোহানেসবার্গে অনুষ্ঠেয় ব্রিকস শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দেবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ব্রিকসের মূল সদস্য ব্রাজিল, রাশিয়া, ভারত ও চীনের শীর্ষ নেতৃত্বেরও ওই অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণের কথা আছে। সব কিছু ঠিক থাকলে জোহানেসবার্গে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে বৈঠক হবে শেখ হাসিনার।
চার বছর পর দুই শীর্ষ নেতার মাঝে বৈঠকটিকে গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে। বাংলাদেশ ও চীনের মাঝে কৌশলগত সম্পর্কের মাত্রা বিবেচনায় নিলে, দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক আরও গতিশীল করার বিষয়ে দুই নেতার আলোচনা হবে বলে আশা করা হচ্ছে। আগামী ২২ থেকে ২৬ আগস্ট ব্রিকস শীর্ষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে।
দুই নেতার মাঝে বৈঠকের বিষয়ে ঢাকার একটি কূটনৈতিক সূত্র জানায়, বেইজিংয়ে ২০১৯ সালে দুই নেতার মাঝে বৈঠক হয়েছিল। এরপর বৈশ্বিক প্রেক্ষাপট অনেক পরিবর্তন হয়েছে। কোভিড, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধসহ অনেক নতুন বিষয় সামনে চলে এসেছে। আশা করা হচ্ছে, দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ছাড়াও বৈশ্বিক প্রেক্ষাপট নিয়ে আলোচনার সুযোগ থাকবে। তবে সবচেয়ে বড় বিষয় হচ্ছে—দুই শীর্ষ নেতৃত্বের মধ্যে যে রাজনৈতিক সম্পর্ক, সেটি আরও দৃঢ় হবে।
রাজনৈতিক সম্পর্ক
যেকোনও শীর্ষ নেতৃত্বের মধ্যে বৈঠক হলে তা রাজনৈতিক সম্পর্ককে আরও দৃঢ় করে এবং আলোচনার মাধ্যমে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ককে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করা হয়।
চীনে বাংলাদেশের সাবেক রাষ্ট্রদূত মুনশি ফায়েজ আহমেদ বলেন, ‘বাংলাদেশের আর্থসামাজিক উন্নয়নে চীনের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এ কারণে দুই দেশের শীর্ষ নেতৃত্বের মাঝে নিয়মিত বৈঠক হওয়া ভালো।’
তিনি বলেন, ‘আমরা এখন বলি উন্নয়নের জন্য দুই দেশের মধ্যে কৌশলগত সম্পর্ক। বিভিন্ন ক্ষেত্রে দুই দেশের সম্পর্ক কীভাবে আরও শক্তিশালী করা যায়, সেই চেষ্টা এখন হবে।’
উভয় দেশের মধ্যে বিভিন্ন বিষয় রয়েছে, যা শীর্ষ নেতৃত্বের মধ্যে আলোচনার মাধ্যমে দ্রুত মীমাংসা করা সম্ভব জানিয়ে তিনি বলেন, ‘যে বিষয়গুলো অফিসিয়াল স্তরে মীমাংসা করতে সমস্যা হয়, সেটি রাজনৈতিক স্তরে সমাধান করা সম্ভব।’
চীন অন্যান্য দেশের মতো নয়। চীনের প্রেসিডেন্ট যদি কোনও বিষয়ে সম্মত হন, তবে সেটি বাস্তবায়ন করা হয় বলে জানান এই সাবেক রাষ্ট্রদূত।
তিনি বলেন, ‘ব্রিকসে বাংলাদেশ যুক্ত হওয়ার বিষয়ে চীন একটি ইতিবাচক ভূমিকা গ্রহণ করেছে। সেজন্য এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক হবে।’
ব্রিকসে যোগদান
বাংলাদেশ ব্রিকসের সদস্যপদ পাচ্ছে কিনা, জানতে চাইলে বুধবার (১৬ আগস্ট) পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের বলেন, ‘এটি তাদের (মূল পাঁচ সদস্য) ওপর নির্ভর করে। সেখানে যে ডিবেট হচ্ছে সেটি হচ্ছে— তিনটি দেশ চাইছে নতুন সদস্য নেবে। এছাড়া ভারত ও ব্রাজিল বলছে, নেওয়ার আগে নতুন নিয়ম-কানুন তৈরি করতে হবে।’
পররাষ্ট্রমন্ত্রী আর জানান, গত জুনে জেনেভায় দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট সিরিল রামাফোসা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন ব্রিকসে যাওয়ার জন্য। তখন ধারণা ছিল তারা নতুন কিছু দেশকে ব্রিকসের সদস্য করবে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট তখন বলেছিলেন, তারা চারটি দেশকে নিতে চায়। আমরা জিজ্ঞাসা করেছিলাম কারা কারা? তখন তিনি জানিয়েছিলেন, সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, ইন্দোনেশিয়া ও বাংলাদেশ।’