রাজপ্রাসাদের নিচে হাজার বছরের কঙ্কাল!

0

কঙ্কাল দু’টি প্রায় হাজার বছরের পুরনো। কিন্তু কাদের কঙ্কাল এই দুটি? কেনই বা রাজপ্রাসাদের নিচে কবরস্থ করা হয়েছিল এদের? বিশেষজ্ঞরা এই প্রশ্নের এক বিস্ময়কর উত্তর দিয়েছেন।

দক্ষিণ কোরিয়ার ইতিহাস সম্পর্কে অনেক রহস্য রয়েছে, যার সত্যোদ্ঘাটন আজও সম্ভব হয়নি। শোনা যায়, এক সময়ে দক্ষিণ কোরিয়ার রাজপরিবারে নাকি পুণ্যার্জনের জন্য নরবলি দেয়ার রীতিও প্রচলিত ছিল। সে সব রীতির কোনও প্রমাণ অবশ্য মেলেনি এখনও। কিন্তু অন্য একটি ঐতিহাসিক রীতির জ্বলন্ত প্রমাণ হাতে এসেছে বিশেষজ্ঞদের। সিলা রাজবংশের বাসস্থান চন্দ্রকেল্লায় ঐতিহাসিক অনুসন্ধানের ফলে উদ্ধার হয়েছে দু’টি কঙ্কাল, যার নেপথ্যে এক হাড় হিম করা সত্য নিহিত রয়েছে বলে অনুমান করছেন ঐতিহাসিকরা।

দক্ষিণ কোরিয়ায় সিলা রাজবংশ ৬৬৮ থেকে ৯৩৫ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত রাজত্ব করে। গেয়ংজু প্রদেশের অন্তর্গত ভোলোসং এলাকায় ছিল এই রাজবংশের রাজধানী। সেখানেই গড়ে উঠেছিল চ‌ন্দ্রকেল্লা- সিলা রাজাদের পারিবারিক বাসস্থান। সম্প্রতি দক্ষিণ কোরিয়ার ইতিহাস সম্পর্কে নতুন তথ্য পাওয়ার আশায় চন্দ্রকেল্লায় খননকার্য শুরু করেন সে দেশের প্রত্নতাত্ত্বিকরা। সেই সময়েই এই দু’টি কঙ্কাল উঠে আসে।

বলা হচ্ছে, প্রাচীন দক্ষিণ কোরিয়ায় এক অদ্ভুত রীতি প্রচলিত ছিল। সে দেশে যখন কোনও রাজার মৃত্যু হতো, তখন তাঁর ব্যক্তিগত পরিচারককে সেই রাজার সঙ্গেই কবর দেয়া হতো। মনে করা হতো, এই রীতি অনুসরণ করলে রাজবাড়ির ‘চাকর’ মৃত্যুর পরেও রাজার সেবা করতে পারবেন এবং পরলোকে রাজার কোনও কষ্ট হবে না। গবেষকদের দাবি, যে দু’টি কঙ্কাল উদ্ধার হয়েছে, সেগুলি কোনও রাজার ব্যক্তিগত দুই পরিচারকেরই।

কিন্তু রাজপ্রাসাদের নিচেই বা তাদের কবর দেয়া হলো কেন? ওই অংশে রাজবংশের কোনও কবর তো মেলেনি! গবেষকরা বলছেন, প্রাচীন দক্ষিণ কোরিয়ায় এমনটাও বিশ্বাস করা হতো যে, কোনও বাড়ি বা প্রাসাদের ভিত খোঁড়ার সময়ে কোনও জীবন্ত মানুষকে সেখানে কবর দিতে পারলে, বাড়ির নির্মাণ নির্বিঘ্ন হয়। এই দু’টি মানুষকেও চন্দ্র প্রাসাদের ভিত খোঁড়ার সময়েই জীবন্ত কবর দেয়া হয় বলে দাবি। প্রাসাদের ভিত খোঁড়ার সময়েই রাজবংশীয় কোনও সদস্যের মৃত্যু হয়। তারই দুই পরিচারককে তখন চন্দ্র প্রাসাদের নিচে জীবন্ত পুঁতে দেয়া হয়। অর্থাৎ কার্যত দুই রীতিই অনুসৃত হয় এই কাজের মধ্য দিয়ে।

গবেষকরা আরও বলছেন যে, ওই দুই পরিচারককে কোনও মাদক খাইয়ে প্রথমে অজ্ঞান করে দেয়া হয়। তারপর তাদের ফেলে দেয়া হয় ভিতের জন্য খোঁড়া গর্তের ভিতরে। সেই কারণেই কঙ্কাল দু’টিতে কোনও আঘাতের চিহ্ন মেলেনি।

About Author

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

  • Click to Chat
  • Click to Chat
  • Click to Chat
  • Click to Chat