অনন্য ওয়ার্নার
দলটা খুব ছোট্ট। মজার ব্যাপার হচ্ছে এই ছোট্ট দলটিতে অস্ট্রেলীয় ক্রিকেটারদেরই জয়-জয়কার। আছেন স্যার ডন ব্র্যাডম্যান, ভিক্টর ট্রাম্পার, চার্লস ম্যাকার্টনি। এই দলে ঢুকে গেলেন ডেভিড ওয়ার্নারও। ব্র্যাডম্যান, ট্রাম্পার, ম্যাকার্টনি—সবাই টেস্টের প্রথম দিন মধ্যাহ্ন বিরতির আগেই পৌঁছে গিয়েছিলেন তিন অঙ্কে। আজ সিডনি টেস্টে পাকিস্তানের বিপক্ষে ৭৮ বলে সেঞ্চুরি করে ব্র্যাডম্যান-ট্রাম্পার-ম্যাকার্টনিদের সঙ্গী হলেন ওয়ার্নার। এই দলে আরও একজন ক্রিকেটার আছেন, তিনি মাজিদ খান।
ভিক্টর ট্রাম্পার প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে টেস্টের প্রথম দিনের মধ্যাহ্ন বিরতির আগেই সেঞ্চুরি করেছিলেন। ১৯০২ সালে ওল্ডট্রাফোর্ডে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ছিল তাঁর এই কীর্তিতে। ট্রাম্পারকে ১৯২৬ সালে অনুসরণ করেছিলেন চার্লস ম্যাকার্টনি ও ১৯৩০ সালে ডন ব্র্যাডম্যান—দুবারই ইংল্যান্ডের বিপক্ষে, দুবারই ভেন্যু ছিল হেডিংলি। মাজিদ খানের সেঞ্চুরিটি ছিল ১৯৭৬ সালে,নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে করাচিতে। অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে এই প্রথম কোনো ব্যাটসম্যান টেস্টের প্রথম দিনের মধ্যাহ্ন বিরতির আগেই সেঞ্চুরি পেয়ে গেলেন। এর আগে ১৯৭৫-৭৬ মৌসুমে ওয়েস্ট ইন্ডিজের ক্লাইভ লয়েড (৯৮) মধ্যাহ্ন বিরতির আগে সেঞ্চুরি-কীর্তির সবচেয়ে কাছে পৌঁছেছিলেন। গত বছর ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষেই অস্ট্রেলিয়ার অ্যাডাম ভোজেস আউট হয়েছিলেন ৯৫ রানে।
৭৮ বলে সেঞ্চুরি করলেও এর চেয়েও দ্রুততার সঙ্গে টেস্ট সেঞ্চুরি করার কীর্তি আছে ওয়ার্নারের। ২০১২ সালে পার্থে ভারতের বিপক্ষে মাত্র ৬৯ বলে সেঞ্চুরি করেছিলেন তিনি। গত মৌসুমে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সিডনিতেই ৮২ বলে সেঞ্চুরি করেছিলেন ওয়ার্নার। টেস্টে দ্রুততম সেঞ্চুরিটি অবশ্য অ্যাডাম গিলক্রিস্টের—সাবেক এই অস্ট্রেলীয় উইকেটকিপার-ব্যাটসম্যান ২০০৬ সালে পার্থে মাত্র ৫৭ বলে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সেঞ্চুরি করেছিলেন।
২০১৬ সালটা ছিল ওয়ার্নের জন্য সোনায় মোড়া। টেস্ট ও ওয়ানডে মিলে মোট ৯টি সেঞ্চুরি করেছিলেন তিনি। নতুন বছর শুরু করলেন আরও একটি সেঞ্চুরি দিয়েই। এ নিয়ে পরপর তিনটি বছর ওয়ার্নার শুরু করলেন তিন অঙ্কের-কীর্তি। ২০১৫ সালের শুরুতেই তিনি ভারতের বিপক্ষে সেঞ্চুরি করেছিলেন। ২০১৬ সালের শুরুতে করেছিলেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সেঞ্চুরি।
ওয়ার্নারের দ্রুতগতির সেঞ্চুরিতে প্রেরণা জুগিয়েছে ওপেনিংয়ে তাঁর সঙ্গী ম্যাট রেনশকেও। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত তিনি অপরাজিত ছিলেন ১৬৭ রানে। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে হারের সিরিজের শেষ টেস্টে দলে এসেছিলেন রেনশ। ওয়ার্নার-রেনশর ১৫১ রানের জুটিই সিডনিতে পাকিস্তানকে ব্যাকফুটে ঠেলে দিয়েছে। ১৫১ রানের মাথায় আউট হন ওয়ার্নার। ২০৩ রানের মাথায় উসমান খাজা। ২৪৪ রানে স্টিভেন স্মিথ আউট হলে একটু বিপদেই পড়েছিল অস্ট্রেলিয়া। সে বিপদ অবশ্য সামাল দিয়েছেন পিটার হ্যান্ডসকম্ব ও রেনশ। এই দুজনের অবিচ্ছিন্ন ১২১ রানের জুটি অস্ট্রেলিয়াকে নিয়ে যাচ্ছে বড় সংগ্রহের দিকে—এই মুহূর্তে অস্ট্রেলিয়ার সংগ্রহ ৩ উইকেটে ৩৬৫ রান। হ্যান্ডসকম্ব অপরাজিত ৪০ রানে। পাকিস্তানের পক্ষে দুটি উইকেট নিয়েছেন ওয়াহাব রিয়াজ। একটি পেয়েছেন ইয়াসির শাহ। সূত্র: স্টার স্পোর্টস।