পর্তুগালকে হারিয়ে সেমিতে মরক্কো

0

অঘটন দূরে থাকুক, অর্জনের চর্চা হোক, মরক্কোর ইতিহাস বলা হোক। বিশ্বকাপের শুরু থেকে আজ, শতবর্ষ হতে চলা আসরে কত হাজার-কোটি শব্দই না লেখা হয়েছে। কত শত গল্প, কত আখ্যান রচিত হয়েছে, কতো উপাখ্যান দেখা হয়েছে; সেই সব কীর্তির সাথে মরক্কোর নামও লেখা হয়ে গেল ইতিহাসে। প্রথমবারের মতো পর্তুগালকে ১-০ গোলে হারিয়ে স্বপ্নের সেমিফাইনালে মরক্কো, প্রথম আফ্রিকান দেশ হিসেবে শেষ চারে পা রাখলো দলটি।

শনিবার তৃতীয় কোয়ার্টার ফাইনালে আল থুমামা স্টেডিয়ামে মুখোমুখি হয় ইউরোপের অন্যতম শক্তিশালী দল পর্তুগাল এবং আফ্রিকার দেশ মরক্কো। ম্যাচের ৪২তম মিনিটে ইয়াহইয়া আতিয়াত-আল্লাহর ক্রস থেকে দুর্দান্ত এক হেডে পর্তুগালের জালে বল জড়ান মরক্কোর ইউসুফ এন-নেসিরি। সেই একটি গোলই জয়-পরাজয় নির্ধারণ করে দেয়।

এর আগে গত ম্যাচের উইনিং কম্বিনেশন থেকে একটি পরিবর্তন আনে পর্তুগাল, কার্ভালহোর জায়গায় একাদশে আসেন রুবেন নেভেস, তবে বেঞ্চ থেকেই ম্যাচ শুরু করেন ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো। অপরদিকে লেফট ব্যাক মাজরিউই চোটপ্রাপ্ত হওয়ায় একটি পরিবর্তন নিয়ে মাঠে নামে মরক্কো।

ম্যাচের পঞ্চম মিনিটে এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ পায় পর্তুগাল, জোয়াও ফেলিক্স এর হেডার ঠেকিয়ে দেন পুরো টুনার্মেন্ট জুড়ে দুর্দান্ত ফর্মে থাকা মরক্কো গোলকিপার ইয়াসিন বনু। এর ২ মিনিট পর গোল করার সুযোগ পায় মরক্কো, হাকিম জিয়েখের কর্নার কিক থেকে বলে সঠিকভাবে মাথা লাগাতে ব্যর্থ হোন এন নেসিরি।

ম্যাচের ২৬ তম মিনিটে আবারো বড় সড় সুযোগ পায় মরক্কো, তবে সেবারও দলকে লিড এনে দিতে ব্যর্থ হোন এন নেসিরি। ৩১তম মিনিটে জোয়াও ফেলিক্স পর্তুগালকে এগিয়ে দেয়ার দাঁড়প্রান্তে ছিলেন, যদি না মরক্কোর সেন্টারব্যাক ইয়ামিক অসাধারণভাবে ব্লক না করতেন।

ম্যাচের ৪২তম মিনিটে কাঙ্ক্ষিত গোলের দেখা পায় মরক্কো। শুরুতে দুটি সুযোগ মিস করলেও এবার ভুল করেননি এন নেসিরি, নিয়মিত লেফটব্যাক মাজরোই এর পরিবর্তে নামা লেফট ব্যাক ইয়াহিয়া আতিয়াতের ক্রস হেড করে জালে জড়িয়ে লিড এনে দেন মরক্কোকে। গোল হজম করার ২ মিনিট পরই ব্রুনো ফার্নান্দেসের শট ক্রসবারে লাগে, ফলে ১-০ গোলে পিছিয়ে থেকেই বিরতিতে যায় পর্তুগাল।

বিরতি থেকে নেমেই ব্যবধান দ্বিগুণ করার সুযোগ পায় মরক্কো। জিয়েখের ফ্রি কিক থেকে ইয়ামিক এর নেয়া হেডার সেভ করেন ডিয়োগো কস্তা। ম্যাচের ফলাফল পরিবর্তনের লক্ষ্যে ৫১তম মিনিটে ফার্নান্দো সান্তোস মাঠে নামান ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোকে। পাশাপাশি বদলি হিসেবে আরো মাঠে নামেন জোয়াও ক্যান্সেলোও।

ম্যাচের ৫৮তম মিনিটে পর্তুগালকে সমতায় ফেরানোর সুযোগ পান গঞ্জালো রামোস, তবে ওটাভিওর ক্রস থেকে তার নেয়া হেডার বার ঘেসে বাইরে চলে যায়। একের পর এক আক্রমণ চালাতে থাকা পর্তুগাল ৬৪তম মিনিটে আবারো সুযোগ পায়, এবার সুযোগ কাজে লাগাতে ব্যর্থ হোন ব্রুনো ফার্নান্দেস। তবে ম্যাচের ৮৩ মিনিটে সম্ভবত ম্যাচ বাঁচানোর মতো সেভ দেন মরক্কো গোলকিপার ইয়াসিন বনু। রোনালদোর ফ্লিকে ফেলিক্সের সেই শট ঠেকিয়ে না দিলে ম্যাচের ফলাফল হতে পারতো অন্যরকম।

ম্যাচের অতিরিক্ত সময়ের প্রথম মিনিটে আবারো মরক্কোর রক্ষক হিসেবে আবির্ভাব ঘটে গোলরক্ষক বনুর, এবার ঠেকিয়ে দেন রোনালদোর শট। ম্যাচের অতিরিক্ত সময়ে উত্তেজনা আর নার্ভ ছড়িয়ে পড়ে দুই দলের ফুটবলারদের মাঝে। যার ফলস্বরূপ লাল কার্ড দেখেন মরক্কোর স্ট্রাইকার ছেদিরা। ম্যাচের একদম শেষ মুহূর্তে ব্যবধান দ্বিগুণ করার সুযোগ পায় মরক্কো, তবে আবুখালাল এর শট বেশ স্বাচ্ছন্দ্যে ধরে ফেলেন পর্তুগিজ কিপার ডিয়োগো কস্তা। এরপরই বেজে যায় রেফারির ফুল টাইমের বাঁশি। ফলে সেমি ফাইনালে উঠে গেলো মরক্কো।

১৫ তারিখ বাংলাদেশ সময় রাত ১টায় ইংল্যান্ড বনাম ফ্রান্স ম্যাচের বিজয়ী এর সাথে সেমিফাইনালে মুখোমুখি হবে মরক্কো।

About Author

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

  • Click to Chat
  • Click to Chat
  • Click to Chat
  • Click to Chat