‘ইউনিফাইড’ জি-৭ রাশিয়ার ওপর নতুন নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং জি-৭ মিত্ররা শুক্রবার রাশিয়ার ‘ওয়ার মেশিন’ এবং মস্কোর লাভজনক হীরা বাণিজ্য এবং ইউক্রেন আক্রমণের সাথে যুক্ত আরো সংস্থার বিরুদ্ধে নতুন নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে।
ধনী দেশগুলোর সংগঠন জি-৭-এর নেতারা জাপানের হিরোশিমায় রাশিয়ার চার থেকে পাঁচ বিলিয়ন ডলারের হীরার মস্কোর বাৎসরিক বাণিজ্য নিয়ে বৈঠক করছেন।
১৫ মাস আগে ইউক্রেনে ভ্লাদিমির পুতিনের আগ্রাসনের কারণে দেশটি নিষেধাজ্ঞার কবলে পড়েছে। যা তার দেশকে মন্দার মধ্যে ঠেলে দিয়েছে এবং ক্রেমলিনকে যুদ্ধে নিঃশেষ করে দিয়েছে।
জি-৭ এখন বিদ্যমান নিষেধাজ্ঞাগুলোকে আরো শক্ত করে, ত্রুটিগুলো খুঁজে বের করে এবং আরো বেশি রাশিয়ান সংস্থা এবং তাদের আন্তর্জাতিক অংশীদারদের শাস্তিমূলক বিধিনিষেধের আওতায় আনতে চাচ্ছে।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি সপ্তাহান্তে ভার্চুয়ালি শীর্ষ সম্মেলনে ভাষণ দেবেন বলে আশা করা হচ্ছে। তবে স্বাগতিক জাপানের জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে তিনি শেষ মুহূর্তে ব্যক্তিগতভাবে সম্মেলনে উপস্থিত হতে পারেন।
ওয়াশিংটন আজ দিনের প্রথম দিকে আরো নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে জি-৭ ভূক্ত দেশগুলোর কাছ থেকে সমর্থন পেয়ে গেছে।
মার্কিন প্রশাসনের একজন সিনিয়র কর্মকর্তা বলেন, রাশিয়া এবং ‘অন্যান্য দেশগুলো’ থেকে আরো ৭০টি সংস্থাকে মার্কিন কালো তালিকায় রাখা হবে।
ওই কর্মকর্তা আরো বলেন, ‘ব্যক্তি, সংস্থা, জাহাজ এবং বিমানের বিরুদ্ধে ৩০০টিরও বেশি নতুন নিষেধাজ্ঞা থাকবে।’
যেহেতু জি-৭ সমষ্টিগতভাবে রাশিয়ার হীরার বাণিজ্যকে বন্ধ করে, উচ্চ প্রযুক্তির ট্রেসিং পদ্ধতিসহ ব্রিটেন তার নিজস্ব ‘রাশিয়ান হীরার উপর নিষেধাজ্ঞা’ ঘোষণা করেছে।
লন্ডন বলেছে, তাদের অ্যালুমিনিয়াম, তামা এবং নিকেল আমদানির লক্ষ্য ছিল।
ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক বলেন, ‘আজকের নিষেধাজ্ঞার ঘোষণাগুলো জি-৭ রাশিয়ার হুমকির মুখে ঐক্যবদ্ধ এবং ইউক্রেনের প্রতি আমাদের সমর্থনে অবিচল।’
আপাতত জি-৭ রাশিয়ান হীরা বাণিজ্যের ওপর সরাসরি নিষেধাজ্ঞার বন্ধ রাখতে পারে। তবে কর্মকর্তাদের মতে, শীর্ষ সম্মেলন হীরার বাণিজ্য বন্ধ করার ইঙ্গিত দেবে।
ইইউ কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট চার্লস মিশেল বলেন, ‘রাশিয়ান হীরা চিরদিনের জন্য নয়। আমরা রাশিয়ান হীরার বাণিজ্যের ওপর কড়াকড়ি আরোপ করব।’
ইইউ সদস্য রাষ্ট্র বেলজিয়াম ভারত ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের সাথে রাশিয়ান হীরার বৃহত্তম পাইকারি বাজার রয়েছে।
জি-৭ ও অন্যান্য নিষেধাজ্ঞা রাশিয়ার যুদ্ধ প্রচেষ্টাকে কতটা ক্ষতিগ্রস্ত করেছে তা নিয়ে অর্থনীতিবিদরা বিভক্ত।
রাশিয়ান অর্থনীতি ২০২২ সালে দুই দশমিক এক শতাংশ সংকুচিত হয়েছিল। এই প্রবণতা চলতি বছরের শুরুতে অব্যাহত ছিল। কিন্তু মস্কো দ্রুত খাপ খাইয়ে নিয়েছে। চীনের মতো মিত্রদের কাছে বাণিজ্যকে সরিয়ে দিয়েছে এবং কিউবা, ইরান এবং উত্তর কোরিয়ার মতো দীর্ঘ নিষেধাঞ্জার কবলে পড়া দেশগুলো থেকে ছল চাতুরির কৌশল ধার করেছে বলে জানা গেছে।
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল ২০২৩ সালে শূণ্য দশমিক সাত শতাংশ অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার অনুমান করেছে।
জি-৭ নেতারা ভারত ও ব্রাজিলের নেতাদের আমন্ত্রণ জানাতেও এই শীর্ষ সম্মেলনকে ব্যবহার করছে। কারণ, এই দু’টি আঞ্চলিক শক্তি কখনো কখনো মস্কো বা চীনের সমালোচনা করতে অনিচ্ছুক।