2017-01-04 01:20:49
আমি দিধাগ্রস্থ, হয়তো আমরা সবাই, আসলেই দিধাগ্রস্থ। আমরা সবাই দিশেহারা হয়ে হাতড়ে বেড়াচ্ছি।
ঋত্বিক কুমার ঘটক, চলচ্চিত্র যুক্তি তক্কো আর গপ্পো। টেলিভিশন নিয়ে কিছু লিখতে বসে যুক্তি তক্কো আর গপ্পোর ঘটক বাবুর ওই দিশেহারা মনোভঙ্গিতে আক্রান্ত হই। আমি, আমাদের বর্তমান টেলিভিশন প্রেক্ষাপট এক মহা কনফিউশনে ভুগছে। তাকে বিশ্লেষণ করতে পারা খুব সহজ কাজ নয়। আজ আমরা টেলিভিশন মাধ্যমের কর্মীরা একত্র হয়ে রাস্তায় নামতে বাধ্য হচ্ছি। ‘শিল্পে বাঁচি, শিল্প বাঁচাই’ স্লোগান দিয়ে রাজপথ উত্তপ্ত করছি। এটা খুবই সুলক্ষণ। দেরিতে হলেও আমরা অনুধাবন করতে পারছি ক্ষয়ে যাওয়া এই শক্তিশালী মাধ্যমটির গুরুত্বের কথা। কিন্তু একটু পেছনের দিকে যদি আমরা তাকাই তাহলেই বুঝতে পারব কেন এই দীনতা।
স্যাটেলাইট চ্যানেলের গোড়ার গল্পটা কিন্তু সত্যিই অন্য রকম ছিল। তখন সত্যিকার অর্থেই শিল্প করার তাগিদ ছিল আমাদের। এরপর দ্রুতই বর্তমান আন্দোলনের সৈনিকদের অনেকেই শিল্পকে কবর দিয়ে দ্রুত পয়সা রোজগারের পথ হিসেবে চিহ্নিত করেন এই বোকা বাক্সকে। যে যেভাবে পারেন প্রতারণার আশ্রয় নেন, যা করে তাঁর রুটি-রুজির ব্যবস্থা হয়, তাকেই ‘ইরেজ মিডিয়া’ বলে গালি দেন এবং আবর্জনা পয়দা করেন। এই এতটুকু দেশে কোনোক্রমেই বৈশিষ্ট্যবিহীন এত টেলিভিশন চ্যানেলের প্রয়োজনীয়তা আদৌ ছিল কি না, তা ভেবে দেখার বিষয়। এখন প্রায়শই দলীয় স্নেহধন্য এবং ভুঁইফোড় পয়সাওয়ালা মানুষদের বলতে শুনি, ‘আমিও একটা টেলিভিশনের লাইসেন্স পাচ্ছি। দেখেন কী করতে পারেন আমার নতুন টিভির জন্য।’ এ যেন মামার হাতের মোয়া, যে চাইবেন, তাঁকেই এক পিস করে দিয়ে দেওয়া যায়।
এ রকম স্বেচ্ছাচারিতা চলতে থাকলে অদূর ভবিষ্যতে প্রতিটি পরিবারেরই একটি করে নিজস্ব চ্যানেল থাকবে। সেই চ্যানেলে তিনি তাঁর স্ত্রী, পুত্র-কন্যা অবৈধ প্রেমিকাকে নিয়ে নর্তনকুর্দন করে যাবেন অবিরত। প্রথম আলো সব সময় ভালোর পক্ষে। সুতরাং আমার এসব মন্দ কথা সেন্সরের কাঁচিতে কচকচ করে কাটা পড়ে যেতে পারে হয়তো। আসুন, আমরা কিছু ভালো কথা বলার চেষ্টা করি।
এ বছর (জীবনে প্রথম) টেলিভিশন নাটক নির্মাণের জন্য বিদেশ, মানে ভারত ভ্রমণ করি। সুদূর মানালি, যেখানে প্রায় বাঙালিশূন্য, সেখানেও অভিনেতা মোশাররফ করিমকে সুঅভিনেতা হিসেবে চিহ্নিত করেছে দু-একজন। আর বাংলাভাষী কলকাতার জনগণ শুধু ইউটিউবের কল্যাণে আমাদের নাটক, সিনেমা ও গানের মহাভক্ত। তথ্যপ্রযুক্তির কল্যাণে আমরা খুব সহজেই জানতে পারি আমাদের একটি একক নাটক ৫০ হাজার বার দেখা হয়েছে। তারপরও কি বলব, আমাদের বর্তমান সময়ের নাটক দর্শক দেখেন না? অবশ্যই দেখেন এবং তাঁরা অপেক্ষা করে থাকেন ভালো নির্মাণ এবং নতুন ভাবনার জন্য।
আমাদের অসীম ক্ষুধা মেটানোর জন্য ফুটেজ চাই ফুটেজ। ফুটেজ দিয়ে ভরিয়ে দাও টিভি চ্যানেলের অসীম ক্ষুধা। এক একটা ঈদ অনুষ্ঠানমালায় চার-পাঁচ শ নাটক প্রয়োজন। সুতরাং নাটক নির্মাণ করতে কিংবা অভিনয়ের জন্য যদু মধু রহিম করিমকে ডেকে আনো। তাঁরা একেকজন অল্প সময়ে অখাদ্য নির্মাণে কী বিচিত্র দক্ষতা অর্জন করেছেন! আর অতি সাম্প্রতিক টিভি স্টেশনগুলো অনুধাবন করেছে যে সেখানে সাহিত্য শিল্পকলা জানা অনুষ্ঠান বিভাগ একেবারেই অপ্রয়োজনীয়। তাঁরা অহেতুক বেতন নিয়ে কোম্পানির বিশেষ ক্ষতিসাধন করছেন। সুতরাং তাঁদের ঝেঁটিয়ে বিদায় করে দাও। তাঁদের এই ফালতু সিলেবাস প্রণয়নের কাজটা এখন করে দিচ্ছেন বিপনণের কর্তাব্যক্তি। তিনি সরাসরি কথা বলছেন একজন জাহিদ হাসান কিংবা মোশাররফ করিমের সঙ্গে। সুপারস্টারদের ডেট যত দামি হোক না কেন, তা যদি পাওয়া যায়, তাহলে যাঁকে ইচ্ছা তাঁকে বললেই তো হলো। তিনি একটা কাতুকুতু মার্কা হাসির নাটক ঠিকই বানিয়ে ফেলবেন। সুতরাং আমাদের শিল্পকলার সম্পূর্ণ দায়ভার যখন তাঁরা নিয়ে নেবেন, তখন দর্শককে দোষারোপ করার কোনো স্পেস আছে বলে আমি মনে করি না।
দেখতে দেখতে আমারও প্রায় বছর ১৬ কাটল এই টেলিভিশন নাটকের আঙিনায়। সুতরাং অনেক কথাই হয়তো লিখছি ক্ষোভ থেকে। কিন্তু সেই ক্ষোভ যে একেবারেই অমূলক তা কিন্তু নয়। টেলিভিশন এখনো পারে আমাদের জাতি গঠনে অনন্য ভূমিকা রাখতে। কিন্তু সে জন্য পৃষ্ঠপোষক দরকার এবং শিল্পীদের আরও যথেষ্ট মনোযোগ দাবি করে এই বোকা বাক্সটি।
প্রযুক্তি যেভাবে এগোচ্ছে তাতে হয়তো একসময় টেলিভিশন যন্ত্রটি একেবারেই অপ্রয়োজনীয় হয়ে পড়বে। কিন্তু গল্প বলা ও শোনার এই প্র্যাকটিস কখনোই ফুরোবে না। সুতরাং গল্প বলার জন্য ভিনদেশি সংস্কৃতিকে অনুকরণের কোনো প্রয়োজন নেই। বরং আমাদের গল্পগুলো আমাদের মতো করে বলার চর্চা এখন অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। বছর শেষে আমি পুনরায় জোর গলায় বলতে চাই বাঙালির স্বকীয়তা এবং শক্তির কথা। দেশীয় টেলিভিশনকে যতই নাক সিটকান না কেন, এখনো স্বল্প বাজেটে সীমিত সাধ্যে আমাদের ছেলেমেয়েরা যেসব অসাধারণ গল্প বলে যাচ্ছে টিভি মাধ্যমে, তা পৃথিবীর আর কোনো দেশে সম্ভব কি না, আমার জানা নেই। আমাদের এখন তথাকথিত (ইন্ডিয়ান আজগুবি সিরিয়াল) টিভি দর্শনে আক্রান্ত না হয়ে নিজস্ব পবিত্র বেসুরো সংগীত চর্চার প্রকৃষ্ট সময়। সবাইকে খ্রিষ্টীয় নববর্ষের আগাম শুভেচ্ছা।
লেখক: নির্মাতা
আমি দিধাগ্রস্থ, হয়তো আমরা সবাই, আসলেই দিধাগ্রস্থ। আমরা সবাই দিশেহারা হয়ে হাতড়ে বেড়াচ্ছি।
…
আমি দিধাগ্রস্থ, হয়তো আমরা সবাই, আসলেই দিধাগ্রস্থ। আমরা সবাই দিশেহারা হয়ে হাতড়ে বেড়াচ্ছি।
…
আমি দিধাগ্রস্থ, হয়তো আমরা সবাই, আসলেই দিধাগ্রস্থ। আমরা সবাই দিশেহারা হয়ে হাতড়ে বেড়াচ্ছি।
…
আমি দিধাগ্রস্থ, হয়তো আমরা সবাই, আসলেই দিধাগ্রস্থ। আমরা সবাই দিশেহারা হয়ে হাতড়ে বেড়াচ্ছি।
…
আমি দিধাগ্রস্থ, হয়তো আমরা সবাই, আসলেই দিধাগ্রস্থ। আমরা সবাই দিশেহারা হয়ে হাতড়ে বেড়াচ্ছি।
…
আমি দিধাগ্রস্থ, হয়তো আমরা সবাই, আসলেই দিধাগ্রস্থ। আমরা সবাই দিশেহারা হয়ে হাতড়ে বেড়াচ্ছি।
…
আমি দিধাগ্রস্থ, হয়তো আমরা সবাই, আসলেই দিধাগ্রস্থ। আমরা সবাই দিশেহারা হয়ে হাতড়ে বেড়াচ্ছি।
…
পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) আজ। ১২ই রবিউল আউয়াল। ১৪৪২ বছর আগের এই দিনে আরবের পবিত্র মক্কা নগরীতে বিশ্বনবী হযরত মুহম্মদ (সা.) জন্মগ্রহণ করেন। ৬৩ বছর পর একই দিনে তিনি ইহলোক ত্যাগ করেন। তাই মুসলিম উম্মাহ্র জন্য আজকের এ দিনটি যেমন আনন্দের, তেমনি শোকের। পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী…
শিক্ষামন্ত্রী বলেছেন, পাঠ্যপুস্তকে ভুলের ঘটনায় জড়িতরা সবাই শাস্তি পাবে। এটি সম্ভব হবে বলে মনে করেন কি?
Votted62 জন